ঢাকায় অজয় রায়ের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
আজ সন্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত অজয় রায়ের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে ঢাকার শাহবাগে ঐক্য ন্যাপের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে অজয় রায়ের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মৃতিচারণ আলোচনার আয়োজন করে সন্মিলিত সামাজিক আন্দোলন।
স্মৃতিচারণে বক্তারা অজয় রায়ের সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মানবিক সমাজের জন্য তাঁর লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন। আমৃত্যু আপোষহীনভাবে সমাজের জন্য তার অবদানের কথা তুলে ধরে শ্রদ্ধা জানান তাকে। অজয় রায় ১৯২৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহন করেন ময়মনসিংহের ইশ্বরগঞ্জে। জীবনের বেশিরভাগ সময় রাজনৈতিক কারনে কারাগারে কাটিয়েছেন। ছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য। ১৯৯২ এ মতপার্থক্যের কারনে কমিউনিস্ট পার্টি থেকে সদস্যপদ ত্যাগ করেন। এরপর তিনি সন্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সমন্বয়ক হিসেবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন।
লেখক সাহিত্যিক ও গবেষক অধ্যাপক আনিসুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, ‘অজয় রায় তার জ্ঞান প্রজ্ঞা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। যারাই গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িকতার জন্য লড়াই করেছেন তাদের সাথে একাত্ম হয়ে গেছেন তিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা পড়াশুনা করেননা, অজয় রায় করতেন। তার কাজকে সবার কাছে পৌছে দেয়ার দায়িত্ব আপনাদেরই।’
আওয়ামীলীগের একসময়ের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল আলম লেলিন বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি মোটাদাগে দুই শিবিরে বিভক্ত। এক অংশ অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ চায়, আরেক অংশ সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে যুক্ত। অজয় রায় সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন আজীবন। আমাদেরও এই লড়াই জারি রাখতে হবে।’
মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারেক বলেন, ‘অজয় রায় তার পুরো জীবনে কখনো সমাজ নির্মানের কাজ থেকে বিচ্যুত হননি। সে জন্য একসময় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন। কিন্তু দলীয় রাজনীতি ছেড়ে দিলেও তিনি লড়াই থামাননি।’
শিক্ষক ডা. অজয় রায় বলেন, ‘গণতান্ত্রিক অসাম্পতদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়তে আন্দোলনের কোনই বিকল্প নাই। অজয় রায় সেই লড়াই করে গেছেন। এ দেশের প্রগতিশীল বামদেরও দায়িত্ব এ লড়াই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
অজয় রায়ের স্মৃতিচারণ করে আরো বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি সারোওয়ার আলী, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক এড. আসাদুল্লাহ তারেক, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুজ্জামান মল্লিক প্রমূখ।
অজয় রায়ের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান, সন্মিলিত সামাজিক আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা মহানগর, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ, জাসদ(নুরুল আম্বিয়া), ওয়ার্কার্স পার্টি, আদিবাসী ফোরাম, আইইডি, জাতীয় শ্রমিক জোট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ(বিসিএল), গৌরব একাত্তর, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও সংস্কৃতি মঞ্চ।