কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পৃথক বাজেট বরাদ্দ চাইঃ কমিউনিটি সচেতনতা র্যলীতে বক্তারা
ইউএস এইড এবং এফসিডিও এর অর্থায়নে এবং কাউন্টার পার্ট ইন্টারন্যাশনাল এর কারিগরি সহযোগীতায় ‘ঢাকাকলিং’ কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের আওতায় বারসিকের উদ্যোগে আজ ২৭ মার্চ ২০২২ সিবিও সোস্যাল মবিলাইজেশনের অংশ হিসেবে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পৃথক বাজেটের দাবিতে বালুর মাঠ হাজারিবাগ এলাকায় র্যলী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আজ সকাল ৯টায় বালুর মাঠ বস্তিতে সিবিও উদ্যোগে বস্তিবাসীদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারণা-র্যালী-ক্যানভাসে সাক্ষর ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিবিও সোস্যাল মবিলাইজেশন ইভেন্টের অংশ হিসেবে উক্ত কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন কাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান ইয়াত, বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার ফেরদৌস আহমেদ, ঢাকা কলিং এর মনিটরিং ও ডকুমেন্টেশন অফিসার ফারহা হাদিয়া, বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কমিটির সভাপ্রধান হোসনে আরা বেগম রাফেজা, সহ সভাপ্রধান হারুন অর রশিদ, হেনা আক্তার, রুপালী বেগম প্রমূখ।
র্যালীপূর্ব সমাবেশে রাফেজা বলেন, আমরা বস্তিবাসীরা নানানভাবে বঞ্চিত। আমাদের নাগরিক হিসেবেই এই শহরে স্বীকৃতি দেয়া হয়না। আমরা মানুষ হিসেবে বাঁচতে চাই। বস্তিবাসীরা এই করোনা পরিবর্র্তী সময়ে নানাবিধ সংকটে নিমজ্জিত। আমাদের সিবিও সদস্যরা বারবার নানা দাবিতে ঢাকা কলিং প্রকল্প থেকে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করে, সম্প্রতি আমরা সংসদীয় কমিটির কাছেও স্মারকলিপি প্রদান করেছি কিন্তু আমাদের খুব কম দাবিই বাস্তবায়ন হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার পৃথক বাজেট ও বরাদ্দ দিক। আসন্ন বাজেটে বস্তিবাসীদের কথাগুলো যেন বরাদ্দের জায়গায় ঠায় পায়।
সিবিও নেতা হারুন বলেন, বস্তিবাসীদের নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম। আমরা সিবিও সংগঠনগুলোকে আরও সংগঠিত করছি সরকারের সামনে আমাদের ন্যায্য দাবিগুলো তুলে ধরার জন্য। সিবিও নেত্রী পেয়ারা বেগম বলেন, ময়লা আমাদের জীবন অতিষ্ঠ কইরা ফালাইছে । আমরা ময়লা থেকে মুক্তি চাই আর চাই একটা সুন্দর জীবন। সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাই আমাদের জন্য রেশনিং এর ব্যবস্থা করেন, আলাদা বাজেট দেন।
সকাল ৯টা বালুর মাঠ হাজারীবাগ থেকে শুরু হয়ে র্যলীটি বেরিবাধ হয়ে শিকদার মেডিকেলের সামনে এসে শেষ হয়। বর্নাঢ্য র্যলীতে বিভিন্ন দাবি দাওয়া সম্মলিত ফেইসটুন ও প্লেকার্ড প্রদর্শন করা হয়। র্যলী থেকে পরিবেশ সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কাপের ম্যানেজার মাহবুবুল হক, কমিউনিটি মবিলাইজার সাবিনা নাঈম, কামরুন নাহার প্রমূখ। আলোচনা সভা থেকে বক্তারা আরও বলেন, বস্তিবাসীরা নানা ধরনের সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করেন আর বর্জ্য সংক্রান্ত সমস্যা হলো তার মধ্যে অন্যতম। সকাল ৯টা থেকে থেকে ১১.৩০টা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মানুষ নানান ভাবে যুক্ত হয়ে কর্মসূচীকে উৎসাহ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে বস্তিবাসী, তরুণ, যুব, সাংবাদিক, সিবিও নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষেরা এই কর্মসূচীর সাথে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য ঢাকা কলিং প্রকল্পটি ডিএসকে, বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাসনলেজ (বারসিক), কোয়ালিশন ফর দ্যা আরবান পুওর (কাপ) এবং ইনসাইট্স এর মাধ্যমে জানুয়ারি ২০২১- ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত চলবে।
দাবিসমূহ:
১। শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
২। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জন্য জাতীয় বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।
৩। জাতীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটিতে শহরের প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত কর্মীদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।
৪। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ করে বস্তিবাসীদের জন্য রেশনিং এর ব্যবস্থা করা।