অন্যান্য

প্রধানমন্ত্রী বরাবর বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের স্মারকলিপি পেশ

বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের চলমান সংকটকালীন সময়ে বেকার ও কর্মহীন হয়ে পড়া যুবদের ঈদের আগে এককালীন অর্থ সহায়তা প্রদান ও আসন্ন জাতীয় বাজেটের ৫% কর্মসংস্থান খাতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দের দাবীতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে।

এ দাবীতে সংগঠণের পক্ষকালব্যাপী কর্মসূচির শেষদিনে আজ ১৭মে ঢাকায় বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠণের দাবী সম্বলিত প্ল্যাকার্ড/পোস্টার হাতে দূরবন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের সভাপতি হাফিজ আদনান রিয়াদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা দেশের সার্বিক বিপুল বেকারত্ব পরিস্থিতির সাথে নতুন করে যুক্ত হওয়া কর্মহীন জনগোষ্ঠীর তীব্র সংকটের প্রতি প্রধানমনত্রীর মনোযোগ আকর্ষণ করে বলেন, সরকারের বিগত কয়েক বছরের বাজেট বক্তৃতায় বারবার উল্লেখ করা হয়েছে কর্মসংস্থান সংকট দেশের প্রধান সমস্যা। সাবেক অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, প্রতিবছর যে সংখ্যক যুবক কর্ম বাজারে প্রবেশ করে তার ১৬ লক্ষের কাজের ব্যবস্থা আমাদের নেই। অথচ ২০০৮ সালের ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট বেড়ে ৫লক্ষ কোটি অতিক্রম করলেও কর্মসংস্থান সংকট মোকাবেলায় পৃথক কোন উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ কখনোই রাখা হয়নি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে আপনি অঙ্গিকার করেছিলেন প্রতি ঘরে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবেন। ন্যাশেনাল সার্ভিসেস নামে পাইলট প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ছেঅনেকদিন আগেই। বিআইডিএসের সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে দেশে করোনা বিপর্যয়ে নতুন করে ২কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ দরিদ্র হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে। পরিস্থিতি অনুধাবনে বুঝতে পারছি এদের অধিকাংশই হবে যুবক। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ি দেশের শিক্ষিত যুবদের ৪২% কর্মহীন। আইএলও বলছে বেকারত্বের হার ১১%। সরকারী চাকরিতে এখনো ৩ লক্ষাধিক পদ শূণ্য রয়েছে। দেশের প্রায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ যুবক বেকার, অর্ধবেকার বা ছদ্মবেকার। কর্মে নিয়োজিত অধিকাংশের কর্মসন্তুষ্টি ও নিরাপত্তা নেই। দেশের এই প্রধানতম সমস্যা সমাধানে জাতীয় বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা ও বরাদ্দ ইতোপূর্বে রাখা হয়নি। আপনার বিগত সরকারের অর্থমন্ত্রীর সময়ে জাতীয় বাজেটে ধর্ম-সংস্কৃতি ও বিনোদন খাতের উপখাতে যুব ও ক্রিড়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যা ছিল দুঃখজনক। আপনি চলতি বছর যুব কর্মসংস্থানের জন্য স্টার্টআপ ক্যাপিটাল হিসেবে ১০০ কোটি টাকার একটি বরাদ্দ রেখেছিলেন। বছর ঘুরে এলেও আমলাতান্ত্রিক নানা জটিলতায় এখনো সে বরাদ্দের পূর্ণ বিতরণও সম্পন্ন হয়নি। কর্মসংস্থান সংকট সমাধানে সে বরাদ্দও যথেষ্ট নয়। আমরা মনে করি, দেশের মোট শ্রমশক্তির বিপুল অংশকে কর্মহীন রেখে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। করোনা পরিস্থিতির ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ে যা আরো বেশী প্রাসঙ্গিক। এমতাবস্থায় কর্মসংস্থানকে জাতীয় বাজেটে একটি পৃথক খাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় বাজেটের ৫% সুনির্দিষ্ট ভাবে কর্মসংস্থান খাতে বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। তা দিয়ে দ্রƒত কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারদেরকে কাজে লাগাতে না পারলে জাতীয় বিপর্যয় অবশ্যম্বাবী। লক্ষ কোটি যুবদের কর্মশক্তিকে নিষ্ক্রিয় রেখে শুধুমাত্র লুটেরা ধনীক শ্রেণীর পৃষ্টপোষকতা করে শেষ রক্ষা হবে না। জাতীয় বাজেটে কর্মসংস্থান খাতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ ছাড়া প্রকৃত উন্নয়ন হতে পারে না। যুব ইউনিয়ন যুবদের এ দাবী আদায়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত আছে।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা যুব ইউনিয়ন যেমনি ভাবে আমাদের সামর্থ ও প্রচেষ্টা নিয়ে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের পাশে আছি, তাদেরকে খাদ্য সামগ্রী, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, জীবানুনাশক স্প্রে, শিশু খাদ্য দিয়ে সহায়তা করছি তেমনি তাদের স্বাস্থ্য ও আর্থিক সুরক্থার জন্য আন্দেলনেও আছি। সরকার বিগত এগরো বছর জাতীয় বাজেটে যুবদের বঞ্চিত করেছে। আর না। এবার জাতীয় বাজেটের ৫% কর্মসংস্থান খাতে সুস্পষ্ট বরাদ্দ দিতে হবে। যুব ইউনিয়ন এ দাবী আদায়ে সর্বাত্মক আন্দেলন গঢ়ে তুলবে।

সমাবেশে অন্যান্যর মাঝে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, ক্রিড়া সম্পাদক আসাদৃজ্জামান আজিম প্রমূখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. সাজেদুল হক রুবেল, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুমনা সোমা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফিরোজ আলম মামুন, সাংগঠণিক সম্পাদক আশিকুল ইসলাম জুয়েল, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা জাহিদ হোসেন প্রমূখ।
দেশের সকল জেলায় অনুরূপ কর্মসূডঢ় পালন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বারবর এ স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়।

Back to top button