ঢাকাস্থ জুম্ম শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ সম্পন্ন

সতেজ চাকমা: প্রতিবছরের ন্যায় বিগত বছরও (২০১৯ ইং) শীতবস্ত্র বিতরণ সম্পন্ন করেছে ঢাকাস্থ জুম্ম শিক্ষার্থীরা। বান্দরবানের থানচি উপজেলার ছোট মদক এলাকার প্রত্যন্ত ত্রিপুরা জনপদে শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগটি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উক্ত উদ্যোগের অন্যতম উদ্যোক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থী সরল তঞ্চঙ্গা।
আয়োজকরা জানিয়েছেন বিগত ২২-২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং তারিখ পর্যন্ত চলা এ শীতবস্ত্র বিতরণ আয়োজনে উক্ত এলাকার ক্যামং হ্যাডমেন পাড়া, রোংসোলা কার্বারী পাড়া, ক্যাশাপ্রু কার্বারী পাড়ার প্রায় ২০০ পরিবারের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে ১ টি করে কম্বল এবং ১৫০ জন স্কুলগামী শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষা সামগ্রী ও সোয়েটার বিতরণ করেছেন।
উক্ত এলাকার স্থানীয় প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধি মৌজা প্রধান সিমন হ্যাডমেন এক আলাপে বলেন, আমি খুব খুশি যে, এধরণের সীমান্তবর্তী একটি প্রত্যন্ত জনপদকে এই আয়োজনের জন্য বেছে নেওয়ার জন্য। তিনি আরো বলেন, এই উদ্যোগের ফলে কেবল কম্বলের মাধ্যমে আমাদের সহযোগীতা নয়, বিভিন্ন পরামর্শ ও আমাদের মধ্যেকার পারষ্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগণকে সামনে এগিয়ে নিতে পারবো বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শীতবস্ত্র বিতরণ উদ্যোগের এবারের আহ্বায়ক পূর্ণা দেওয়ান জানান, আমরা কেবলমাত্র একটি কম্বল এই প্রত্যন্ত জনপদে পৌছানোর জন্য এই আয়োজন করি না, আমাদের এই উদ্যোগটি ঢাকায় পড়াশুনারত জুম্ম শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজস্ব দায়বোধে সামিল করে এবং শেকড়ের প্রতি আমাদের দায়কে আরো শাণিত করে।
এক প্রশ্নের জবাবে উক্ত আয়োজনে অংশগ্রহনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী এচাইমং চাক আইপিনিউজকে বলেন, এবারে আমরা এমন এক প্রত্যন্ত জনপদে শীতবস্ত্র বিতরণে গেলাম যেখানে পুরো একটি বিস্তুত জনপদে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মাত্র ১ জন। উক্ত জনপদের পিছিয়ে পড়া মানুষের যাতায়াত ও টেলিকমিউনিকেশন সুবিধা একেবারেই নেই বলেও জানান এই শিক্ষার্থী। তিনি আরো জানান, পিছিয়ে পড়া এই জনপদে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ও নেই। মিশনারী যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো রয়েছে সেগুলোর অবকাঠামা ও শিক্ষার মানও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তবে উক্ত এলাকার পাহাড়ী জুম্ম শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষা বিষয়ক মতবিনিময় করে পিছিয়ে পড়া এই শিক্ষার্থীরা বেশ অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলেও জানান ঢাবির এই শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য ঢাকাস্থ জুম্ম শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণের এই আয়োজনটি বেশ পুরনো। প্রতিবছর ঢাকাস্থ জুম্ম শিক্ষার্থীরা সামষ্টিক অংশগ্রহনের মাধ্যমে পাহাড়ের প্রত্যন্ত জনপদে শীতবস্ত্র বিতরণ উদ্যোগটি চালু রেখেছে। এবারের শীতবস্ত্র বিতরণের মূল সুর ছিল- সাঙ্গুর উজানে উষ্ণতার হাসি ফুটুক, ভালোবাসার চাঁদরে।