ছাত্রনেতা সানির হত্যার রায় কার্যকরের দাবি বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর
আইপিনিউজ ডেক্স (ঢাকা): বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর রাজশাহী পলিটেকনিক শাখার ছাত্রনেতা রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানির হত্যার রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী। গতকাল ০৭ জানুয়ারি ২০২২ শুক্রবার বেলা ১১টায় শহীদ রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানির স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি তোলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “২০০৯ সালের অক্টোবর মাসের দিকে তথাকথিত দলীয় কোটার অন্তরালে ভর্তি বাণিজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার কারণে সংগঠনের রাজশাহী পলিটেকনিক শাখার তৎকালীন নেতৃবৃন্দ ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রোষানলে পড়ে। তারই জের ধরে ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসজ্জিত হয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম ও সাধারণ সম্পাদক তুষার গং-এর নেতৃত্বে ছাত্র মৈত্রীর নেতৃবৃন্দর উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে প্রাণ হারায় পলিটেকনিক শাখার তৎকালীন সহ-সভাপতি শহীদ রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানি। একই ঘটনায় ডান হাতের চারটি আঙুল কাঁটা পড়ে তৎকালীন পলিটেকনিক শাখার সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েলের। প্রায় দীর্ঘ ৬মাস স্মৃতিশক্তিহীন থাকে আরেক সহ-সভাপতি শেরাফত আলী বুলবুল। এই হত্যাকান্ড পরবর্তীতে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এবং পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে নিজাম-তুষারকে ছাত্র শিবির থেকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে দাবি করা হয়।”
তারা আরো বলেন, “শহীদ সানির জীবনোৎসর্গের মধ্যদিয়ে গণমাধ্যমের কল্যানে সারাদেশে ভর্তি বাণিজ্য এবং এই বাণিজ্যকে ঘিরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংহিংসতার ঘটনা সমালোচিত হলে সরকার নড়েচড়ে বসে। অপরদিকে ছাত্র মৈত্রীর লাগাতার আন্দোলনের ফলে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন পলিটেকনিকগুলোতে অনলাইন ভিত্তিক ভর্তি পদ্ধতি চালু করে। যার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ২০১২ সালের দিকে নিম্ন-আদালতে সানি হত্যার বিচারের রায় হয়, যেখানে নিজাম ও তুষারকে মৃত্যুদন্ড, বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে আসামীপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করলে রায় বহাল রাখা হলেও সেই রায় কার্যকর করা হচ্ছে না। আমরা শহীদ সানির হত্যার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মহামান্য আদালতের ঘোষিত রায় কার্যকরের দাবি জানাই।”
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদ সানির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনকালে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক অতুলন দাস আলো, সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম, ইয়াতুন্নেসা রুমা, রাশেদ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক অদিতি আদৃতা সৃষ্টি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তানভীন আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক হিশাম খান ফয়সাল, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও ক্রিড়া সম্পাদক সুমাইয়া পারভীন ঝরা, সদস্য নূর নীরব এবং ঢাকা মহানগর শাখার রাজনৈতিক শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক তামিম হোসেন চন্দন প্রমুখ।