গাইবান্ধায় আদিবাসী যুব সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সাঁওতালসহ বিভিন্ন আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা, আদিবাসী যুবদের মধ্যকার নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি, মানবাধিকার কর্মী, অ্যাক্টিভিস্ট এবং স্থানীয় সংগঠনসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের লক্ষ্যে গাইবান্ধায় আদিবাসী যুবদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শতাধিক সাঁওতাল-উড়াওঁসহ বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের যুব নারী-পুরুষ এতে অংশগ্রহণ করে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাইবান্ধায় শিশু স্বর্গ ও বিনোদন পার্কে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রি প্রেস ইউনাইটেড ও আর্টিকেল নাইনটিন এর সহায়তায় এ কর্মসূচির আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অবলম্বন। সাঁওতাল-উড়াওঁসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তাদের অধিকার, ভাষা-সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশের দাবি-সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুনসহ সমাবেশে অংশগ্রহণ করে। সমাবেশ শেষে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করে।
অবলম্বন এর নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাজহারউল মান্নান, সাংস্কৃতিক কর্মী শিরিন আকতার, নারীনেত্রী মিতা হাসান, নাজমা বেগম, শিক্ষক অশোক সাহা, আহাদুজ্জামান রিমু, অবলম্বন এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর একেএম মাহবুব আলম মুকুল, সাঁওতাল নেত্রী সুরভী মার্ডি, ইয়ুথ নেতা স্বরস্বতী পাহাড়ী, সান্তনা রবিদাস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এটি হতাশাজনক যে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পরেও বাংলাদেশে বিভিন্ন জনজাতির নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের দাবি উপেক্ষিত হয়ে আসছে। বর্তমানে দেশের ৫০টির বেশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভাষায় রয়েছে অনেক গীত, ঝুমুর, লোকগাঁথা, প্রবাদ-প্রবচন, গল্প; যা কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, এই সকল ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ জরুরি। না হলে ভাষাগুলো গবেষণা ও পরিচর্যার অভাবে হারিয়ে যাবে। তাদের সংস্কৃতিও বিলুপ্ত হচ্ছে। এরা বাংলাদেশের দরিদ্রতম প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। অধিকাংশই ভূমিহীন। সরকারি ও বেসরকারি সেবাদানকারী সংগঠনসমূহকে আদিবাসীদের জীবনযাত্রার মান ও সংস্কৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা।
তারা বলেন, পৃথিবীর সব ভাষার প্রতি সম্মান রাখা প্রয়োজন বিশেষ করে আদিবাসীদের ভাষা রক্ষায় সব দেশের সরকারদের সচেতন ও সক্রিয় থাকা উচিত। দেশের আদিবাসীদের ভাষা চর্চা ও বিকাশ নিশ্চিত করার মাধ্যমেই দেশের সব জাতির মাতৃভাষার প্রতি আমাদের সম্মান নিশ্চিত করা সম্ভবপর হবে।