অন্যান্যতথ্য প্রযুক্তি

সড়ক দুর্ঘটনায় গত ৫ বছরে দেড় শতাধিক পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন প্রকাশ

সড়ক দুর্ঘটনায় একসাথে পুরো পরিবার নিহতের প্রবণতা বাড়ছে। গত ৫ বছরে দেড় শতাধিক পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আজ রোড সেফটি-এর নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারভিত্তিক নিহতের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত মোটরবাইক, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে একসাথে পুরো পরিবার বা এক পরিবারের অধিক সদস্য নিহতের প্রবণতা বাড়ছে।

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ধারণা করছে গত ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় শতাধিক পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

মোটরবাইক, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্সে ঘটা দুর্ঘটনা অনুসারে নিহতদের সংখ্যা তুলে ধরে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। প্রতিবেদন অনুসারে অটোরিকশায় ঘটা দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, মোট ১১৭৯ জন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মোটরবাইক আরোহী হিসেবে স্বামী-স্ত্রী নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১২৩টি এবং পিতা-পুত্র নিহতের ঘটনা ঘটেছে ৮৪টি। অর্থাৎ ১২৩টি বাইক দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন ২৪৬ জন এবং ৮৪টি দুর্ঘটনায় পিতা-পুত্র নিহত হয়েছেন ১৬৮ জন।

অটোরিকশা দুর্ঘটনায় অটোরিকশা যাত্রী হিসেবে স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১৩৭টি। ৩ জন নিহতের ঘটনা ৭৮টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ৬২টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ৩৮টি, ৬ জন নিহতের ঘটনা ২৬টি এবং ৭ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১১টি। মোট ৩৫২টি পরিবারের ১১৭৯ জন নিহত হয়েছে।

মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসের আরোহী হিসেবে একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১৬টি, ৩ জন নিহতের ঘটনা ২২টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ১৭টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ১১টি, ৬ জন নিহতের ঘটনা ৮টি এবং ১১ জন নিহতের ঘটনা ১টি। মোট ৭৫টি পরিবারের ২৮০ জন নিহত।

এছাড়াও প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় প্রাইভেটকার আরোহী হিসেবে একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ২৪টি। ৩ জন নিহতের ঘটনা ২১ টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ১৭ টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ১৪ টি। মোট ৭৬টি পরিবারের ২৪৯ জন নিহত।

অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে ৩ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ৯টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ৫টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ৩টি, ৮ জন নিহতের ঘটনা ১টি। মোট ১৮টি পরিবারের ৭০ জন নিহত।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন যে সকল কারণসমূহ উল্লেখ করেছে সেগুলো নিম্নরূপ:

১.সড়ক অবকাঠামো বিস্তৃত হওয়ায় পরিবারের সকলে একসাথে বেড়াতে বা কোনো কাজে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে

২. মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল

৩. অধিকাংশ মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্সের ফিটনেস না থাকা

৪. মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স চালকদের অদক্ষতা ও বিশ্রামহীন ড্রাইভিং করা

৫. ট্রাফিক আইন না মেনে বেপরোয়া মোটরযান চালনা।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন যে সুপারিশসমূহ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে:

১. মোটরবাইক আরোহীদের ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করা

২. ট্রাফিক আইন মেনে মোটরযান চালানো

৩. মহাসড়কে রোড ডিভাইডার ও সার্ভিস রোড নির্মান করা

৪. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্বারা সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের চলাচল নজরদারি করা।

Back to top button