আঞ্চলিক সংবাদ

মধুপুরে বাঙ্গালীদের দ্বারা এক আদিবাসীকে মারধরের ঘটনায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ

টাঙ্গাইল জেলাধীন মধুপুর উপজেলার ভূটিয়া গ্রামে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ওয়ার্ড সেক্রেটারি দ্বারা এক আদিবাসীকে মারধরের ঘটনায় এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা যায়, গত ৫ই জুন সন্ধ্যায় গ্রামের নিশিকান্ত রেমাকে ওয়ার্ড সেক্রেটারি আনিস তার নিজ ফার্মেসী দোকানে ডাকেন। সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটির আরো বেশ কিছু কর্মী উপস্থিত ছিল। নিশিকান্ত ফার্মেসীতে প্রবেশ করার সময় তাকে সেন্ডেল পায়ে দোকানে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু দোকানের ভেতরে উপস্থিত বাঙ্গালী সদস্যরা সবাই সেন্ডেল পায়েই প্রবেশ করেছিল। নিশিকান্ত রেমা জানতে চান যে, অন্যরা সবাই সেন্ডেল পায়ে প্রবেশ করতে পারে তাহলে তাকে কেন সেন্ডেল খুলতে হবে? এরপর সেন্ডেল পায়েই নিশিকান্ত দোকানে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে দোকান থেকে বের করে দেওয়া হয়।

নিশিকান্ত রেমা এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় এক সময় বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে আনিস এবং তার দুই ভাই মিলে তাকে কাঠের সারক দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে। এরপর এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে। পরদিন তাকে মধুপুর সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ৯ জুন নিশিকান্তকে বাড়িতে আনা হয়। তবে নিশিকান্ত এখনো পুরোপুরি সুস্থ হন নি।

ঘটনার পর স্থানীয় আদিবাসীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। আওয়ামীলীগের স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটির সেক্রেটারি পদ থেকে আনিস রহমানকে বহিস্কার এবং ঘটনার সুস্থ তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ভোলার কাছে গ্রামের আদিবাসী জনগণের গণসাক্ষর সংবলিত একটি লিখিত আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

এর আগেও একাধিকবার আনিস রহমান দ্বারা আদিবাসী নির্যাতনের অভিযোগ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। এছাড়াও, বিভিন্ন সময় সরকারী তহবিল থেকে আসা ত্রান এবং অন্যান্য সহযোগীতার অর্থ ও রেশনের চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগও জানান এলাকাবাসী।

শোলাকুড়ি কলেজের প্রভাষক এবং স্থানীয় বাসিন্দা রিচার্ড বিপ্লব সিমসাং আইপিনিউজকে জানান, আমাদের এই অঞ্চল গারো এবং কোচ আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। কিন্তু শেষ এক দশক ধরে এলাকায় বাঙ্গালীদের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। এরপরেও আমাদের মধ্যে পারস্পারিক সৌহার্দবোধ এখনো আছে। কিন্তু আমাদের ওয়ার্ড সেক্রেটারি আনিস রহমান সহ বেশ কিছু বাঙ্গালীদের সাম্প্রদায়িক আচরন এলাকার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এবং এলাকাবাসীদের মনে সাপ্রদায়িকতাকে উস্কে দিচ্ছে। এমতাবস্থায়, খুব দ্রুত পদক্ষেপ না দিলে এখানকার আদিবাসী বাঙ্গালীদের অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধে আঘাত হানবে।

Back to top button