জাবি’তে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের দিনব্যাপী মিলনমেলা সম্পন্ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুইশ’ আদিবাসী শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়।
আইপিনিউজ, ঢাবি প্রতিনিধিঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার, বুয়েট জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আদিবাসী শিক্ষার্থী পরিবারের মধ্যেকার মিলনমেলা গত শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দিনব্যাপী আনন্দঘন পরিবেশে ও নানা আয়োজনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। ঢাকার সাভারে অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত উক্ত মিলনমেলায় প্রায় ২০০ আদিবাসী শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এদিকে মিলনমেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার এবং ইন্ডিজিনাস স্টুডেন্টস এসোশিয়েশন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ফুটবল ম্যাচে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবারের ফুটবল একাদশ ৩-০ গোলে জয়ী হয়। এছাড়া, মধ্যাহ্নভোজন পরবর্তী তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জুম্ম ও আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি গেট টুগেদার অনুষ্ঠিত হয়।
“ইন্ডিজিনাস স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়”- এর সভাপতি রাম খুম লিয়ান মংপা বমের সভাপতিত্বে এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জয়ন্ত ত্রিপুরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হওয়া গেট টুগেদারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক উথোয়াই চিং রোয়াজা এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন “ইন্ডিজিনাস স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়”- এর সাধারন সম্পাদক: কল্যাণী চাকমা।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি রেং ইয়ং ম্রো। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থী সতেজ চাকমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি ঐতিহ্য চাকমা, বুয়েটের সিনিয়র শিক্ষার্থী অং শোয়ে সিং মারমা এবং উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদিকা ও নারী নেত্রী শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা ও বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চ্যং ইয়ুং ম্রো।
জাবি’র সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা রেং ইয়ং ম্রো বলেন, পাহাড়ের রাজনৈতিক জটিলতার নানা সমীকরণ নিয়ে আপনাদের ভাবতে মাথা ভারী লাগলেও এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে যেখান থেকে নির্ধিধায় পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক মঙ্গলের জন্য কাজ করা যায়। আমরা যতই যা করি না কেন, শেকড়’কে ভুলে আমরা কেউই টিকে থাকতে পারবো না। এই মিলন মেলায় উপস্থিত জুম্ম শিক্ষার্থীরা নিশ্চয় শেকড়ের প্রতি নিজেদের দায় অনুভব করবে। দিন শেষে আমাদেরকেই নিজেদের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থী সতেজ চাকমা বলেন, এই মিলনমেলায় দেশের তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত আছেন। আমি মনে করি দেশের সর্বোচ্চ এই তিন প্রতিষ্ঠানে যারা পড়ছে তারা সবচেয়ে বেশী মেধাবী, প্রাগসর, সুবিধাপ্রাপ্ত ও সবচেয়ে বেশী সম্ভাবনাময়ী। কাজেই যেহেতু আমরা আমাদের সমাজের প্রাগ্রসর অংশ, কাজেই আমাদের নিজেদের শেকড় নিয়ে আমাদেরকেই ভাবতে হবে। আশা করি আমাদের এই প্রজন্ম শেকড়ের প্রতি নিজেদের সর্বোচ্চ দায় অনুভব করবে এবং আগামী দিনের নিজেদের করণীয় নির্ধারণ করবে।
এবারের তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মিলনমেলার মূল সুর ছিল ‘প্রীতির বন্ধনে বাঁধি বহুত্বের ঐকতান, সংহতির সুরে গায় শেকড়ের গান।’