সমাজকল্যান প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিন আর নেই
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যান বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সমাজকল্যান প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিন স্যার আর নেই। তিনি আজ বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় মুম্বাইয়ের হলি ফ্যামিলী হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ২৮ এ এপ্রিল সকাল ৮ টায় মুম্বাই এর হলি ফ্যামিলী হসপিটালে উনার অপারেশন হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এডভোকেট প্রমোদ মানকিন এমপি ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ এপ্রিল নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বাকালজোড়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত গারো পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা স্বর্গীয় মেঘা তজু এবং মা স্বর্গীয়া হৃদয় শিসিলিয়া মানকিন। তিনি আট ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চম ছিলেন।
প্রমোদ মানকিন ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে নটরডেম কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস (বিএ) ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বি.এড) এবং ময়মনসিংহ ‘ল’ কলেজ থেকে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে এলএলবি ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন।
ছাত্রজীবন ও কর্মজীবনের শুরু থেকেই তিনি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদানের মাধ্যমে তার সরাসরি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ। মৃত্যুকালে তিনি হালুয়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।
গারো এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একজন প্রতিনিধি হিসেবে জনাব মানকিন জাতীয়ভিত্তিক সামাজিক সংস্থা- ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি এখনও প্রতিষ্ঠানটির কেন্দ্রীয় সভাপতি দায়িত্ব পালন করছিলেন।
একজন সংগঠক হিসাবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধে তিনি ভারতের মেঘালয় শিববাড়ি উদ্বাস্তু শিবিরে পরম আন্তরিকতার সাথে ৫০,০০০ শরণার্থীর দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করেন।
একজন স্কুল শিক্ষক হিসেবে জনাব মানকিন কর্মজীবন শুরু করেন, পরে তিনি আইন পেশা ও এনজিও কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট হন।
তিনি ১৯৬৪ সালের ২৯ জানুয়ারি নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বিশিষ্ট গারো নেতা ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জোয়াকিম আশাক্রা এর জ্যৈষ্ঠ কন্যা মমতা আরেং এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি পাঁচ কন্যা ও এক পুত্রের জনক। মৃত্যুকালে উনার বয়স ছিল ৭৭ বছর।