লামায় ভূমি রক্ষা আন্দোলনের সংগঠক রংধন ত্রিপুরার উপর হামলা
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): সাম্প্রতিক সময়ে লামায় রাবার কোম্পানি কর্তৃক বাগান পুড়ে দেওয়ার ঘটনায় ভূমি রক্ষা আন্দোলনের একজন সংগঠকের উপর হামলা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলার শিকার সংগঠকের নাম রংধজন ত্রিপুরা (২৮)। তিনি সরই ইউনিয়নের ক্যাজু বাজারে ৩০৩ নং ডলুঝিড়ি মৌজার হেডম্যান জোহন ত্রিপুরার ছোট ভাই।বুধবার রাতে রংধজনের উপর হামলা হয়। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রংধজনের মামাত ভাই মোক্ষি ত্রিপুরা বলেন, “বুধবার রাতে হেডম্যান কার্যালয়ে বসে কাজ করার সময় ফারুক নামের এক কিশোরের নেতৃত্বে কয়েকজন কার্যালয়ের দরজায় টোকা দেন। রংধজন দরজা খোলার পরপরই তার মাথায় আঘাত করে হামলাকারীরা। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর তাকে মারধর শুরু করে।”
রংধজন হামলার ঘটনা মোবাইল ফোনে তার ভাইকে জানানোর পর তিনি সেখানে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
বান্দরবান জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার এবং লামা উপজেলা সদর থেকে থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সরই ইউনিয়ন। সেখানে ৪০০ একর এলাকায় তিন পাড়াবাসী দীর্ঘদিন ধরে জুম চাষ করে আসছেন।
২০২১ সালে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের এক প্রতিষ্ঠান ওই জমিকে তাদের ইজারা নেওয়া জায়গা হিসেবে দাবি করে।
এ নিয়ে স্থানীয় আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, যাতে সংগঠকের ভূমিকায় রয়েছেন রংধজন।
রংধনু ত্রিপুরা’র স্বজনদের অভিযোগ, পাহাড়িদের ভূমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ‘ভাড়া করা সন্ত্রাসী’রা এ হামলা চালিয়েছে।
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল এই সরই ইউনিয়নে প্রায় ৩০০ একর এলাকা জুড়ে করা জুম চাষের জমিতে আগুন দেওয়া হয়েছিল। তখনও লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিল ভুক্তভোগী আদিবাসীরা।
তখন লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল বলেছিলেন, “এই জমি লিজ নেওয়া হয়েছে। সেখানে রবার চারা ও কাজু বাদাম লাগানোর জন্য জঙ্গল কেটে আগুন লাগানো হয়েছিল। এতে পাড়াবাসীর কারও কোনো ঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সবার ঘর অক্ষতই আছে।”
বুধবার রাতে আহত অবস্থায় রংধজনকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালে ওয়ার্ডের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে রংধজনকে। তার বাম চোখ ফোলা ও ঠোঁটে সেলাই দেওয়া হয়েছে।
আইপিনিউজকে মোক্ষি ত্রিপুরা জানান, তার সিটি স্ক্যান করানো হয়েছিল। আর অন্যান্য আঘাতের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তবে সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।