নিজ নিজ ভাষায় শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আদিবাসী ছাত্র পরিষদের স্মারকলিপি

আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ ১ মার্চ ২০২০ তারিখে বিকাল ৪.০০টায় রাজশাহীর অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অফিসের পরিচালক প্রফেসর ড. মো: কামাল হোসেনের এবং প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদের মাধ্যমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নকুল পাহানের নেতৃত্বে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আদবিাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাবিত্রী হেমব্রম, কোষাধ্যক্ষ অনিল রবিদাস, সদস্য অনিল গজার, শিউলি নাদীয়া মার্ডি, বিথী পাহান প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে ৩ দফা দাবি জানিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশে বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির প্রায় ৫০টির অধিক আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। সরকার ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষা নীতির আওতায় এ দেশের ৬টি আদিবাসী ভাষায় প্রাথমিক স্তরে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ গ্রহন করে এবং ২০১৭ সালে ৫টি আদিবাসী ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হয়। ভাষাগুলো হল চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো এবং সাদরি। এজন্য আদিবাসীরা সরকারের কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। লিপি বিতর্কের কারনে সাঁওতালি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা যায় নি। চালু হওয়া ভাষাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করে আমরা আদিবাসী ছাত্র পরিষদ লক্ষ্য করেছি যে, পাহাড় এবং সমতলে আদিবাসী ভাষায় চালু হওয়া স্কুলগুলোতে বাংলা ভাষাভাষী শিক্ষকদের দিয়ে আদিবাসী কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করানো হচ্ছে। আদিবাসী শিশুরা মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ পেলেও পাঠদানে সঠিক বোধগম্যতার এবং প্রাঞ্জলতার অভাবে বিকৃতভাবে পাঠ্য বিষয় তাদের মাঝে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যেটা আদিবাসী শিশুদের জন্য বিব্রতকর। আদিবাসী ভাষায় সঠিকভাবে শিশুদের পাঠদান করানো না গেলে শিশুরা মাতৃভাষার উপযুক্ত চর্চা থেকে বঞ্চিত হবে।এজন্য স্কুলগুলোতে আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ আব্যশিক হয়ে দাড়িয়েছে।
এদিকে আদিবাসী ভাষায় ছাপানো বই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার স্কুলগুলোতে সঠিক সময়ে পৌছাচ্ছে না। এজন্য আদিবাসী শিশুদের নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহনের কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। কারণ সঠিক সময়ে আদিবাসী শিশুদের মাঝে বই বিতরণ করা হচ্ছে না। এতে ভবিষ্যৎ আদিবাসী সমাজের জন্য অপুরনীয় ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াবে। বিধায় আদিবাসী ভাষায় চালু হওয়া স্কুলগুলোতে আদিবাসী ভাষার সঠিক চর্চার পরিবেশ সৃষ্টি করতে আপনার সুনজর একান্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।
নিন্মে দাবি সমূহ :
১. সকল আদিবাসীদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক স্তরে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
২. যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থী রয়েছে সে সকল বিদ্যালয়ে আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৩. একই সময়ে আদিবাসী শিশুদের কাছে আদিবাসী ভাষায় প্রণীত বই বিতরণ করতে হবে।