ঝিমাই পুঞ্জির খাসিয়াদের জমি দখলের প্রতিবাদে রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন

সতেজ চাকমা: মৌলভী বাজারের কুলাউড়া উপজেলার পাহাড়ী এলাকায় একটি খাসি গ্রাম ঝিমাই। এ এলাকার ঝিমাই চা বাগান কর্তৃপক্ষ নানা কুচক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে চা-বাগানের পাশে ঝিমাই খাসি পুঞ্জি’র (গ্রাম) জমি দখল করার জন্য এবং একপ্রকার এ গ্রামের ৭২ টি খাসি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই প্রতিবাদে আজ বুঝবার (২০ নভেম্বর, ২০১৯) রাজধানীর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ১০ টি নাগরিক সংগঠন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন আদিবাসী ফোরামের সাধারন সম্পাদক সঞ্জিব দ্রং। তিনি তাঁর বক্তব্যে দাবী করেন, খাসিয়ারা শত শত বছর ধরে ঝিমাই পুঞ্জিতে বসবাস করে আসছে। কিন্তু তাদের স্বাতন্ত্র পরিবেশ পরিস্তিতি এবং প্রথাগত বিচার ব্যবস্থা ও ভূমি ব্যবস্থাকে বিবেচনায় না নিয়ে সরকার ২০১২ সালে ঝিমাই চা-বাগানের জন্য ৬৬৬.৫৫ একর জমি লিজ নবায়ন করে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, যে পরিমাণ জমি লিজ দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে ২০০ একরের বেশী জমি বাগান কর্তৃপক্ষ দখল করে নিয়েছে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, চা- বাগান কর্তৃপক্ষ খাসিয়াদের স্বাভাবিক চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। পুঞ্জিতে ঢোকার যে মূল সড়কটি রয়েছে সেটিতে ফটক নির্মাণ করে তাঁদের (খাসিয়াদের) চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এতে পুঞ্জির পাদদেশ পর্যন্ত গাড়ি, এম্বুলেন্স যেতে পারছে না এবং এ অসুবিধার শিকার হচ্ছে উক্ত পুঞ্জির খাসিয়ারা।
উক্ত পুঞ্জির সমস্যা সমাধানে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের দাবী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংহতি বক্তব্যে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, ঝিমাই পুঞ্জির খাসিয়াদেরকে চাপের মধ্যে রাখা হয়েছে। তাদেরকে অন্যায়ভাবে জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চলছে। এ সংকটের সমাধান জরুরী।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী খাসী নেত্রী হেলেনা তালাং অভিযোগ করে বলেন, আজকাল সলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। কিন্তু আমাদের (ঝিমাই পুঞ্জি) গ্রামের শত বছরের গাছ যদি কাটা হয় তাহলে কী জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাব পড়বে না?
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন সুপ্রীম কোর্টের সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, নিজেরা করি সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক খুশী কবির, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা সহ বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের উর্দ্ধতন ব্যক্তিরা।
উক্ত সংবাদ সংবাদের আয়োজন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, কুবরাজ আন্তপুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠন, এএলআরডি, আইপিডিএস, কাপেং ফাউন্ডেশন, বেলা, ব্লাষ্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা), রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট কালেক্টিভ এবং নিজেরা করি। বক্তারা অভিলম্বে উক্ত পুঞ্জির খাসি আদিবাসী সংকট নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ সহ যথাযথ পদক্ষেপ দাবী করেন।