অন্যান্যআঞ্চলিক সংবাদ

৩ পাড়াবাসীকে হত্যা ও ২ শিশুকে গুলিবিদ্ধ করার প্রতিবাদে ত্রিপুরাদের মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলা ৪ নং বড়থলী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড সাইজাম পাড়ায় গত ২১ জুন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট ( কেএনএফ) কর্তৃক গুলি করে ৩ পাড়াবাসীকে হত্যা ও দুই শিশুকে গুলিবিদ্ধ করে আহত করার প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও সমাবেশ করেছে বান্দরবানের ত্রিপুরা সম্প্রদায়। মানব বন্ধনে অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় বান্দরবান প্রেস ক্লাব চত্ত্বরে বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ ও ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম বান্দরবান শাখার উদ্যোগে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সংহতি জানিয়েছে বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্য স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফোরাম।

সমাবেশে বক্তাগণ গত ২১ জুন কেএনএফ কতৃর্ক সাইজাম পাড়ায় ৩জন নিরীহ গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা ও দুই শিশুকে গুলিবিদ্ধ করে আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারের নিকট কুকিচিন সহ সকল সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করার আহবান জানান।

বক্তারা বলেন তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ৫টি পাড়া ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ৬টি পাড়া উচ্ছেদ হয়ে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয় স্বজনের বাসায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পাড়া বাড়ীতে গচ্ছিত ধান- সহায় সম্পত্তি, জুম চাষকৃত জুমক্ষেত ফেলে এসেছেন। তারা এখন সেই জুমে-বাড়ীতে প্রাণ ভয়ে কেউ যেতে পারছেন না নিজের বাড়ীঘর ফেলে সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাদেরকে নিজ নিজ পাড়া গ্রামে অবস্থান করার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে শাস্তি প্রদান নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরন প্রদান করার দাবি জানান।

সন্ত্রাসীরা নিরীহ ৩জন গ্রামবাসীকে খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি। বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি দুই জেলার সীমান্ত ১১টি গ্রামের ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের সবাইকে পাড়া ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকী দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ১১টি পাড়া থেকো ৯১টি পরিবার ভয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রাণের ভয়ে পালিয়েছে।

রোয়াংছড়ির ও রুমা উপজেলার সীমান্ত দুর্গম অঞ্চলে মহেন্দ্র ত্রিপুরা পাড়াসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৬টি ত্রিপুরা পাড়ার ৯২ পরিবার ও ৫টি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার ৬২ পরিবার কুকি-চিনের হুমকিতে পাড়াবাসী আতঙ্কিত হয়ে অধিকাংশ পরিবার পাড়া ছেড়ে পালিয়েছে। যারা পাড়ায় অবস্থান করতেছে তাদেরকেও প্রতিনিয়ত হুমকীদিয়ে পাড়া ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।

মানববন্ধন শেষে বান্দরবান জেলাপ্রশাসকের মাধ্যমে প্রধামন্ত্রী বরাবরে ৭দফা সম্বলিত দাবিনামা জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

মানব বন্ধনে দোহা জলাই ত্রিপুরা,সত্যহা পাঞ্জি ত্রিপুরা, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক উজ্জল তঞ্চঙ্গ্যা, স্টিভ ত্রিপুরা, ওয়া তৈ ত্রিপুরা, নিরন তঞ্চঙ্গ্যা, সুরেশ ত্রিপুরা, মার্গারেট ত্রিপুরা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

Back to top button