খাগড়াছড়িতে আবারও দুই আদিবাসীর ফলজ গাছ কর্তনের অভিযোগ: খামার ঘরে অগ্নিসংযোগ
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সদর উপজেলার পেরাছড়া ইউনিয়নের পেরাছড়া মৌজাস্থ ১২ নম্বর এলাকায় (বিজিবি সেক্টর হেডকোয়ার্টারের পাশে) সেটলার বাঙালি কর্তৃক দুই আদিবাসী গ্রামবাসীর মিশ্র ফলজ বাগানের বিভিন্ন ফলজ গাছ কেটে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরী একটি খামার ঘরে অগ্নিসংযোগ ও আরেকটি বসত ঘর ভাংচুরের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
গত রবিবার (১৩ নভেম্বর ২০২২) রাতে স্থানীয় কয়েকজন সেটলার বাঙালি বাগানের একটি ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ও আরেকটি ঘর ভাংচুর করে টিনের বেড়া কেটে নষ্ট করে দিয়েছে বলে বাগান মালিকরা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বাগানের মালিক জ্যোতিষ জ্ঞান চাকমা জানান, গত ১১ নভেম্বর ২০২২ সকাল আনুমানিক ৮ টার সময় খাগড়াছড়ি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর সবুজবাগের ০১. মো. শাহিন (৪৫), পিতা-নেল ফকির, ০২. মো. রনজু (৪৫), পিতা-আবুল হাশেম, ০৩. আব্দুর রাজ্জাক, পিতা-চান মিয়া, ০৪. আল আমিন (৩০), পিতা-আব্দুর রাজ্জাক সহ অজ্ঞাতনামা ০৭/০৮ জন আমার বাগানে প্রবেশ করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তারা আমাকে জমির দখল ছেড়ে দেওয়াসহ আমার ঘর (খামার ঘর) পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সেদিন প্রস্থান। উক্ত ঘটনার পরদিন (১২ নভেম্বর) আমি খাগড়াছড়ি সদর থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ দাখিল করলেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
ভুক্তভোগী জ্যোতিষ জ্ঞান চাকমা আরো বলেন, গতকাল (রবিবার) রাতে তারা আমার বাগানে নির্মিত একটি ঘর আগুন লাগিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে এবং আরেকটি ঘরে ভাঙচুর করেছে, ঘরের টিনের বেড়াগুলো কেটে নষ্ট করে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এর আগে গত ২/৩ মাস পূর্ব হতে একই ওয়ার্ডের কুমিল্লা টিলার মো. জসিম (৩৫) পিতা- মতিন মিস্ত্রী আমার কাছ থেকে ৫০,০০০/- টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। কিন্তু আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ২৭ অক্টোবর ২০২২ আমার দখলীয় জায়গাটি তার দাবি করে আমার বাগানে জঙ্গল কাটা শুরু করে। আমি তাদেরকে বাধা দিলে আমাকে সেদিন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। উক্ত ঘটনার পর আমি গত ২৯ অক্টোবর ২০২২ খাগড়াছড়ি সদর থানায় অভিযোগ দাখিল করেছি।
জ্যোতিষ জ্ঞান চাকমা অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনায় সেটলাররা বাগানে বেড়ার জন্য ব্যবহৃত ১০০টি পিলার, বেড়ার ১৭টি জি আই তারের নেট খুলে নিয়ে গেছে। এছাড়া বাগানে রোপন করা ৫০০ টি সুপারি চারা, ৫০০টি পেঁপে গাছ, ৯ প্রজাতির ৩০০টি কলা গাছ, ৫০০টি সিটলেস লেবু গাছ কেটে ধ্বংস করে দিয়েছে। এছাড়াও পাশে চুঙ্কু চাকমা নামে আরেকজনের বাগানে ২৮০টি আম গাছ কেটে দেয়ারও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি আমার নিরাপত্তা ও বাগান রক্ষার্থে খাগড়াছড়ি সদর থানায় পর পর দু’টি অভিযোগ দায়ের করার পরও পুলিশ প্রশাসন অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যার ফলে তারা বার বার বাগানটি দখলের জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি অবিলম্বে বাগান ধ্বংসের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দাবী করেন এবং একই সাথে নিরাপত্তা ও বাগান রক্ষার্থে অবিলম্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবিও জানিয়েছেন।