জাতীয়

পাহাড়ে ক্ষুধা ও অভাবের হাহাকার অথচ সরকার উন্নয়নের অহংকারে ভাসছেঃ সন্তু লারমা

এখনও পাহাড়ে আশ্রয়হীন মানুষ ক্ষুধা ও অভাবের তাড়নায় হাহাকার করছে। অথচ সরকার উন্নয়নের জোয়ারে আত্ম অহংকারে ভেসে বেড়াচ্ছে, বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা। শনিবার সকালে রাজধানীর কাওরান বাজারে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
সন্তু লারমা বলেন, ‘বর্তমান সরকার বলছে, উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে দেশ। প্রকৃতপক্ষে আদিবাসী জনগণ, গরিব প্রান্তিক কৃষক, দলিত হরিজন, খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষ, চা বাগানের শ্রমিকসহ লাখ লাখ মানুষ এই কথিত উন্নয়নের জোয়ারে ডুবে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বলছে, বাংলাদেশ নিন্ম মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম জোর দিয়ে বলতে চায়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত হাজার হাজার আদিবাসী মানুষের জীবনে এ কথার প্রতিফলন নেই।’
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ১৩১ জন মানুষ মারা গেল ও ২০ হাজার পরিবার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হলো অথচ সরকারের তেমন কোনও কর্ম তৎপরতা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাঘাইছড়ির সাজেকে প্রায় ৩ হাজার পরিবার ১৫ হাজার মানুষ খাদ্যাভাবে হাহাকার করছে।’

সংবাদ সম্মেলনে এসময় ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন সন্তু লারমা। তিনি বলেন, ‘আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত ও প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে। সংবিধান সংশোধন করে আদিবাসীদের আত্ম-পরিচয় ও অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২০০৭ সালে গৃহীত আদিবাসী অধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্র অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার, আদিবাসী জনগণ ও জাতিসংঘ- এ তিন পক্ষের অংশগ্রহণে আদিবাসী অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রকে পদক্ষেপ গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘আওয়ামীবাসী ছাড়া দেশে কেউ ভালো নেই। এ দেশ শুধু আওয়ামী লীগ ও আওয়ামীবাসীদের দেশ নয়, সবার দেশ। আমরা নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আশা করবো, সব রাজনৈতিক দল ৯ তারিখে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করবে।’

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি শুধু পাহাড়ে নয়, গণতন্ত্রের ভূমিধস হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনও সেনাশাসন অব্যহাত আছে। সবাই বলছেন নির্বাচনের কথা, আমি নির্বাচন দেখি না।’

পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধিত করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মেজবাহ কামাল। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের একটা বিধান করেছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পায় না। এ কালা কানুন বাতিল করতে হবে।’

Back to top button