পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরণো বছরকে বিদায় জানিয়েছে পাহাড়ের আদিবাসীরা
রাঙামাটি প্রতিনিধি: সুন্দর নতুনের আহবানে পানিতে ফুল ভাসিয়ে বাংলার পুরণ বছরকে বিদায় জানিয়েছেন পাহাড়ে আদিবাসীরা। বুধবার ভোরে কর্ণফুলী, চেঙ্গী, মাইনী, কাচালং, রেইংখ্যং নদীর সংযোগস্থল কাপ্তাই হ্রদসহ পাহাড় থেকে নেমে আসা হাজারো ছড়ার পানিতে ফুল ভাসায় আদিবাসীরা।
বুধবার সকাল ৭ টায় রাঙামাটি শহরের রাজবন বিহারের পূর্ব ঘাটে এবং গর্জনতলিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল ভাসানো অনুষ্ঠান করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম ও ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশন।
আদিবাসীরা মনে করেন, এদিনে (২৯ চৈত্র) পানিতে ফুল ভাসিয়ে দিলে পুরণো বছরের সমস্থ গ্লানী মুছে যায়। পানির স্রোতে ফুলের সাথে পুরণো বছরের গ্লানী মুছে নতুন বছরের নতুন দিনগুলো বয়ে আনে সুখ শান্তি ও সম্মৃদ্ধি। যুগ যুগ ধরে এই সংস্কৃতি লালন পালন করে আসছে আদিবাসীরা ।
রাজবাড়ি ঘাটের ফুল ভাসানো অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়। এসময় তিনি বলেন, শুধু নতুন বছর নয় এখানে পুরণো বছরকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যেমে আদিবাসীরা পুরণো বছরের খারাপ দিকগুলো ত্যাগ করে ভালগুলো সাথে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা খুঁজেন। এই উৎসবে চৈত্রকে সামান গুরুত্ব দেওয়া হয়। নিজেদের আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার উদযাপিত হবে মুল বিজু। এ দিনে আদিবাসীদের বাড়িতে চলবে খানাপিনার আয়োজন। এদিনে সবার বাড়িতে রান্না হবে পাজন (হরেক রকম সবজি দিয়ে রান্না করা বিশেষ তরকারী)। শুক্রবার হবে গজ্জ্যাপজ্যা দিন (নতুন বছর)। এদিন বয়োজ্যষ্ঠদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। বৌদ্ধ সাধকদের দিয়ে মংগল সূত্রের মাধ্যমে আত্মপরিশুদ্ধ হবেন বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারীরা। অন্যরাও ধর্মীয় পুরহিত দিয়ে নিজেদের পরিশুদ্ধ হবেন।
পাহাড়ের বসবাসরত ১৩টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই উৎসবকে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বলে বৈসু, মারমারা সাংগ্রাই, চাকমারা বিজু, অন্যরা বিষু, বিহু, চাংক্রান ইত্যাদি।