অন্যান্য

বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব অযৌক্তিক : সাধারণ নাগরিক সমাজ

আজ ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ রোজ শনিবার সকাল ১০.৩০টায় বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের উদ্যোগে ‘বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব ও বাস্তব অবস্থা’ নাগরিক ভাবনা শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুস্ঠিত সভায় এফবিসিআইসি’র পরিচালকমন্ডলীর সদস্য আব্দুল হক বলেন, শিল্পে সংকট চলছে। আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। সৎভাবে থাকা শিল্প মালিকরা খরচ পোষাতে পারছে না। এরপর বিদ্যুতের দাম বাড়লে অনেক শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা চাই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো থেকে সরকার সরে আসুক। তিনি বলেন, এ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব লুটপাটকারীদের সুবিধা দেয়ার আরেক প্রক্রিয়া।

সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দুর্নীতি , অব্যবস্থাপনা আর অপচয় বন্ধ করলেই বিদ্যুতের দাম কমানো যাবে। বিইআরসি সেই দায়িত্ব পালন করছে না। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলে ও এলপিজি’র দাম নির্ধারণে কমিশন ভূমিকা রাখার দায়িত্ব থাকলেও এরা রাখে না । এ মূল্য নির্ধারণ করে জ¦ালানী মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন বিদ্যুতের দাম বাড়াতে সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে গণশুনানীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে । তিনি বলেন , বিদ্যুৎ না নিয়েও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে প্রতি বছর এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা দিতে হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানীকে । এ দায় সাধারন জনগন নেবে না ।তিনি বলেন,এ অবস্থা চলতে থাকলে ,বিইআরসি জনমত উপেক্ষা করে বিদ্যুৎএর দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া থেকে সরে না এলে এই প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষনা করা হবে। তিনি বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারী প্রতিস্ঠানের উৎপাদন সরকারী খাতের থেকে বেশী হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন বিদ্যুত এর মত খাতকে বেসরকারী প্রতিস্ঠানের হাতে জিম্মি হতে দেওয়া যাবে না ।

বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, মূল্য বৃদ্ধির নামে সরকার লুটপাটের ব্যবস্থা করতে চায়। এই লুটপাট চলছে সর্বত্র। বিদ্যুতের দাম বাড়লে এর প্রভাব পড়বে সর্বত্র। দরিদ্র মানুষ এমনিতেই মূল্য বৃদ্ধির চাপে অতিষ্ঠ। এক সময় বিদ্যুৎ নিয়ে খাম্বা কাহিনী দেখেছি। এখন কাগজে কলমে উৎপাদন বাড়ছে অথচ বিদ্যুৎ দেখছি না। বিইআরসি জনগণের না হয়ে সরকারের মতের প্রতিফলনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে।

গনসংহতির সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, রেন্টাল, কুইক রেন্টালের প্রয়োজন না থাকলেও এদের সুবিধা দেয়ার জন্য নতুন করে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে। এটা চলতে দেয়া যায় না। তিনি বলেন, দেশে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এর মধ্যে দাম বাড়লে দেশে মানুষ বিপাকে পড়বে। তিনি সরকারের এসব আচরণের সমালোচনা করেন এবং দুর্বার প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানান।

সভায় আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ দেশের বর্তমান নাগরিক জীবন ব্যবস্থা ও মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের যৌক্তিকতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, গত ৭ থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা জনগণের মতামত নেয়ার জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছি। তাতে লক্ষ্যণীয় যে, যদি সারাদেশব্যাপী স্বাক্ষর সংগ্রহ করা যেত তাহলে হয়তো ১৭ কোটি লোকেরই এই বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব বাতিলের পক্ষে স্বাক্ষর নেয়া যেত। আমরা আগামী ২৩ তারিখ বিইআরসি তে স্বাক্ষর জমা দিব।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর প্রকল্প পরিচালক ইকরামুল হক, সিএনজি ওনার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মো. আরিফ, কাজী ছাব্বের আহম্মেদ, মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু বক্কর সিদ্দিক, যুগ্ম সম্পাদক এড. ইসরাত হাসান, সদস্য জোয়ার্দ্দার, সবুজ আন্দোলনের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার প্রমুখ।

Back to top button