অন্যান্য

৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার গণ-অভ্যুত্থান দিবস

ঐতিহাসিক সিপাহী জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ৪৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ ৭ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় ঢাকার শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – বাংলাদেশ জাসদ’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি জনাব শরীফ নুরুল আম্বিয়া। আজকের আলোচনায় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হোসাইন আহমেদ তফছিরের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাসদ সাধারণ সম্পাদক জনাব নাজমুল হক প্রধান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মুশতাক হোসেন, মোঃ খালেদ, করিম সিকদার, আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, বাংলাদেশর শ্রমিক জোট আহ্বায়ক আবদুল কাদের হাওলাদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আবদুস সালাম খোকন, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান জাকির, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গৌতম শীল সহ বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ। সভার শুরুতে শহীদ কর্ণেল আবু তাহের বীরউত্তম ও সদ্যপ্রয়াত বাংলাদেশ জাসদ কার্যকরী সভাপতি জনাব মঈনউদ্দিন খান বাদল এমপি’র প্রতি শোক জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আজকের আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি জনাব শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, “৭ নভেম্বর ১৯৭৫ কর্ণেল তাহের সৈনিক-জনতার ঐক্যের ভিত্তিতে এক দুঃসাহসিক অভ্যুত্থান করেছিলেন। জেনারেল জিয়ার ষড়যন্ত্রের ফলে এবং জাসদের কিছু ভুলত্রুটি কারণে এ বিপ্লব সফল হয়নি। জিয়া এই অভ্যুত্থান থেকে ফায়দা তুলতে জামাত-মুসলিম লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে। ক্ষমতা সংহত করতে জিয়া শুধু তাহেরকে হত্যা নয় সে অনেক মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। জিয়া ৭ নভেম্বরকে বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে চিত্রিত করলেও এই রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। সে ক্যান্টনমেন্টের সৈনিকদের ঐক্যবদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। জিয়াউর রহমানের ষড়যন্ত্রে তাহের ও জনগণ সেদিন সফল হতে পারেননি। তবে ৭ নভেম্বরের অভিজ্ঞতা নিয়ে ভবিষ্যতে জনগণ জয়লাভ করবে। ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থান মুক্তিকামী সংগ্রামী জনগণের প্রেরনা হয়ে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, “ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের তত্বাবধানে জিয়া দল গঠন করেছিল। জাতীয় পার্টিও ক্ষমতাসীন সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদ একই কায়দায় গঠন করেছে। তারা উভয়ই জামাত ও হেফাজত মার্কা দলের সমর্থনে রাজনীতি করেছে। তারা কেউ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বর্তমানে বিএনপি একটি জামাত-নির্ভর দলে পরিনত হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সংঙ্গ থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। সামরিক শাসকদের গ্রামার নিয়ে গণতন্ত্র অগ্রসর হওয়ার কোন সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধের বাইরে এদেশে কোন দল টিকে থাকবে না। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র আমাদের প্রেরণা। সমতা ও ন্যাবিচার ভিত্তিক কল্যাণমুখি রাষ্ট্র গঠনের জন্য গণতান্ত্রিক ধারায় সাংবিধানিক রাজনীতির চর্চা করতে হবে। দেশ এখন দুর্বৃত্ত ও লুন্ঠনকারীদের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা। শুদ্ধি অভিযানে সাফল্য নিয়ে সংশয় আছে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সংস্কার না হলে, রাজনৈতিক দূর্নীতি দূর না হলে ভবিষ্যত উজ্জ্বল বলা যাবে না। সৎ নেতৃত্ব ও গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়নের নামে অপচয় হবে বেশী।”

বাংলাদেশ জাসদ সাধারণ সম্পাদক জনাব নাজমুল হক প্রধান শহীদ আবু তাহের ও শতশত সৈনিকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “গণতন্ত্র চর্চার জন্য পরিবেশ উম্মুক্ত করতে হবে। এজন্য সরকারের কিছু করার আছে। নির্বাচন কমিশনকে সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। আইনের মারপ্যাঁচে নিবন্ধনের একাধিক মাপকাঠি বাদ দিতে হবে। অনেক নিষ্ক্রিয় দল নিবদ্ধিত রয়েছে। অথচ বাংলাদেশ জাসদের মত সক্রিয় দলের নিবন্ধন হয়নি। নিবন্ধনের নামে এমন প্রতারণা ও তামাশা বন্ধ করতে হবে। এখন যেমন নির্বাচন হচ্ছে, তা বিবেচনায় নিলে নিবন্ধন প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী আইনের প্রয়োজনীতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য। বর্তমান নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাদ দিলে রাজনীতি ও নির্বাচনের কোন ক্ষতি হবে না বরং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া উম্মুক্ত হতে সহায়ক হবে। আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলমুক্ত রাখার দাবি করছি।”

Back to top button