আঞ্চলিক সংবাদ

বকেয়া মজুরির দাবিতে সিলেটে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের তিনটি চা বাগানসহ সব বাগানের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও বাগান রক্ষার দাবিতে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত শনিবার বেলা ৩টায় সিলেটের এয়ারপোর্ট সড়কের বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের টিকেট কাউন্টারের সামনে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে সমাবেশটি হয়।

সংগঠনের জেলার সভাপতি বীরেন সিংয়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য শিপন পালের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল রায়, ৬ নম্বর টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান সফিক, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, সাংবাদিক দেবাশীষ দেবু, চা শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হৃদেশ মুদি, হিলুয়াছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি মদন গনজু, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মুখলেছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ রুদ্র প্রমুখ ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ৩ মাস ধরে লাক্কাতুরা, কেওয়াছড়া, দলাদলিসহ ন্যাশনাল টি কোম্পানির চা শ্রমিকরা মজুরি থেকে বঞ্চিত। মজুরি না পেয়ে শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গত ৫ অগাস্ট সরকারের পতনের পর থেকে অচলাবস্থা শুরু হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে, স্বাভাবিকভাবে মানুষ আশা করেছিল বৈষম্যের অবসান হবে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে শ্রমিকরা।

গত দুর্গাপূজার সময় থেকে আন্দোলন চলছে, আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বোনাস দেওয়া হলেও নিয়মিত মজুরি দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি বক্তাদের।

ডিসির মাধ্যমে স্মারকলিপি ও নানা প্রতিবাদের মুখে আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না দাবি করে বক্তারা বলেন, শুধু আশ্বাসে শ্রমিকের পেট চলে না। সন্তানসহ অসহায় হয়ে পরছে শ্রমিকরা, দোকানে বাকিও মিলছে না।

সমাবেশে নেতারা অবিলম্বে বকেয়া মজুরি পরিশোধ করে বাগানের স্বাভাবিক কর্ম পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। না হলে আন্দোলন জোরদার করার হুঁশিয়ারি দেন।

মজুরি না পেয়ে প্রতিবাদে দীর্ঘ ১ মাসেরও বেশি সময় কর্মবিরতি পালন করছেন চা শ্রমিকরা।

দীর্ঘদিন কর্মবিরতি চললে বাগানেরও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতি হবে। এতে কোনো সুফল বয়ে আনবে না দাবি করে সিলেটের নাগরিক সমাজের নেতারা বলেন, সিলেট অঞ্চল চা বাগান অধ্যুষিত, সিলেটের অর্থনীতির জন্য যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া চা বাগানকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠেছে। সারাদেশের মানুষ চা বাগানের সৌন্দর্য দেখতে আসে। এই শিল্প ধ্বংস হলে সিলেটের মানুষও অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এজন্য সিলেটের সব মানুষকে এ আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানান তারা।

তথ্যসূত্র ও ছবিঃ  বিডিনিউজ ২৪

Back to top button