গত ৩রা জানুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার, মধুপুরে ইকোপার্ক বিরোধী আন্দোলনের বীর শহীদ পীরেন স্নালের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার জালাবাদায় অবস্থিত পীরেন খিম্মায় শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে আদিবাসী সংগঠনসমূহ।
আদিবাসী ছাত্র ও যুব সংগঠনসমূহের “খা সাংমা, খা মারাক” ও “পীরেন তোমায় ভুলিনাই, রাজপথ ছাড়িনাই / আমরা সবাই পীরেন সেনা, ভয় করিনা বুলেট বোমা।” — স্লোগানে কেঁপে ওঠে মধুপুরের বনাঞ্চল। পীরেন খিম্মায় এক এক করে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ, গারো স্টুডেন্ট ফেডারেশন (জিএসএফ), বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস), গারো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (গাসু), আবিমা গারো ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন (আজিয়া), এবং ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সহ অনেক সংগঠন।
একই দিনে পীরেন স্নালের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গারো স্টুডেন্ট ফেডারেশন (জিএসএফ) স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করে জালাবাদার পীরেন খিম্মায়। এছাড়াও দিনটিকে ঘিরে পীরেন স্নালের নিজগ্রাম জয়নাগাছায় আলোচনা সভা ও পীরেন স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট এর আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর গড়ে বন বিভাগের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের প্রচেষ্টার প্রতিবাদে স্থানীয়দের মিছিলে বনরক্ষী ও পুলিশ গুলি চালায়। এতে গারো যুবক পীরেন স্নাল নিহত হন এবং আহত হন আরও প্রায় অর্ধশতাধিক।
এ ঘটনার পর পীরেনের বাবা নেজেন নকরেক একটি হত্যা মামলা করলেও, পরে আদালত তা খারিজ করে দেন।
বীর শহীদ পীরেন স্নাল সমগ্র আদিবাসীদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে ও আদিবাসীদের মৌলিক অধিকার রক্ষার যুদ্ধে বীরত্বের এক অনন্য উদাহরণ। জাতির জন্য তার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে থাকবেন। বিচারহীনতার ২১ বছর হয়ে গেলেও আজও পীরেন হত্যার কোন বিচার হয়নি।