আঞ্চলিক সংবাদ

খাসিয়া পুঞ্জির পান জুমে তিন শতাধিক পান গাছ কেটে দিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা 

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার ৫নং পুঞ্জির দক্ষিন ডিমাই এলাকার খাসিয়াদের পান জুমের তিন শতাধিক পান গাছ কেটে দিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটির কথা নিশ্চিত করেছে ৫ নং পুঞ্জির মন্ত্রি কেনেডি সুমের। 

৫নং পুঞ্জির মন্ত্রি কেনেডি সুমের-এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আইপিনিউজকে বলেন, “প্রায় তিন শতাধিক পান গাছ কেটে নষ্ট করে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা, যার বাজার মূল্য আনুমানিক ছয় লক্ষ টাকা। এই ঘটনার তিনদিন আগে রাতের বেলা প্রায় ৬ থেকে ৭ বস্তার মতো সুপারিও নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। আমরা এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।” 

তিনি আরও জানান, “ এ ধরনের ঘটনা এর আগে এই পান পুঞ্জিতে কখনই ঘটেনি। পানের দামের সিজনে পান পাতা চুরির ঘটনা ঘটে কিন্তু এভাবে পান গাছ ক্ষতি করে রেখে যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম। মোট তিনটি বাগানে এই ঘটনা ঘটেছে। আমারা ডিমাই এলাকায় সবাই মিলেমিশে থাকি এখানে কারো সাথে কারও প্রতিহিংসা নাই। কে বা কারা এই ক্ষতিটা করলো আমরা নিজেরাও বুঝতেছি না।” 

যে তিন জুমের গাছ দুর্বৃত্তরা কেটে দিয়ে গেছে সে জুমের মালিক হলেন ব্রুসলী লামিন, মিন্দু সুমের(মহিলা), ও নামী লামারং(মহিলা)। 

কেটে রেখে যাওয়া পানগাছ দেখছেন গ্রামবাসী

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা কারও বিরুদ্ধে মামলা করেন নি। সবাই পুঞ্জিতে মিলেমিশে থাকে, সবার সাথে সবার সুসম্পর্ক। তবে স্থানীয়রা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে। থানার ওসি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছেন। 

বড়লেখা থানার এসআই দুলাল সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আইপিনিউজকে জানান, “আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পুঞ্জি থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোন মামলা হয় নি। এখন পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। রাতের আঁধারে গাছ কেটে রেখে যাওয়ায় কোন প্রত্যক্ষদর্শীকেও পাওয়া যায় নি, আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। ” 

পান গাছ খাসিয়াদের প্রধান জীবিকা। একটি পান গাছ থেকে ৮-১০ বছর ধরে ভালো ফলন পাওয়া যায়। খাসিয়াদের অর্থনীতি মূলত পান চাষের ওপর নির্ভরশীল। পান গাছ কেটে দেওয়া মানে জীবিকার উপর হুমকি, যা এক একটি পরিবারকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেয়। বিভিন্ন পানপুঞ্জিতে পান গাছ কেটে দেওয়ার মত ঘটনায় শঙ্কিত আছেন খাসিয়া নেতৃবৃন্দ। 

Back to top button