অন্যান্য

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের পথচলায় নানা সংকট ও সম্ভাবনা

আইপিনিউজ, ফিচারঃ প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহুসংখ্যক আদিবাসী শিক্ষার্থী ভর্তি হন। পড়াশোনার পাশাপাশি আদিবাসী শিক্ষার্থীরা স্বকীয় ভাষা-সংস্কৃতি চর্চার জন্য সম্পৃক্ত হন নানান সহশিক্ষা কার্যক্রমে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যকার পারষ্পরিক যোগাযোগ ও সংহতি বজায় রাখা এবং কর্তৃপক্ষের নিকট নিজেদের নানা দাবী-দাওয়া তুলে ধরতে গড়ে তোলেন সংগঠন কিংবা প্লাটফর্ম। তেমনই কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্বিবদ্যালয়ে পাবর্ত্য চট্টগ্রাম ও সমতল অঞ্চল থেকে পড়তে আসা আদিবাসী শিক্ষার্থীরা গড়ে তুলেছেন নিজেদের সংগঠন।

জুম্ম ছাত্র কল্যান সমিতিঃ

মূলত সাংস্কৃতিক ভিন্নতা থেকেই সংগঠিত হওয়ার তাগিদ অনুভব করে নিজেদের দাবি-দাওয়াগুলো প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা এবং নিজেদের মধ্যে পারষ্পরিক যোগাযোগ সুদৃঢ় করার জন্য এই সংগঠনটির গোড়াপত্তন। সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি মিলন জ্যোতি চাকমা আইপিনিউজকে বলেন, “দেশের তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান থেকে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি অরাজনৈতিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন জুম্ম ছাত্র কল্যাণ সমিতি। ১৯৯৮ সালে কয়েকজন জুম্ম ছাত্র-ছাত্রীদের হাত ধরে এর যাত্রা। এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত জুম্ম শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট রাখা, জুম্ম শিক্ষার্থীদের ভর্তি বিষয়ক বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করা। বিভিন্ন জাতীয় দিবসসমূহে সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৫০ জনের অধিক জুম্ম শিক্ষার্থী বিভিন্ন বর্ষে অধ্যয়নরত আছে।”

ভিন্নতার সংকট এবং স্বকীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরাঃ

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মন্টু চাকমা বলেন, “দেশের স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৭৫ একর বিস্তৃত।  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের প্রথম প্রথম নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নিজেকে নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়া। ভাষাগত পার্থক্যের কারণে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। আমার মাতৃভাষা চাকমা। রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়ার কারণে ছোটবেলা থেকেই বাংলা অক্ষর পড়তে পড়তে বাংলা  ভাষা আয়ত্ত করতে পারলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ইংরেজিতে পড়তে হচ্ছে। যার ফলে ভাষা আয়ত্ত করতে আর নিজেকে মানিয়ে নিতে একটু সমস্যা হয়। তারপরেও সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে আমরা চেষ্টা করি পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেদের ভাষা-সংস্কৃতি চর্চা অব্যাহত রাখতে।“

মাতভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সংগঠনটির নানা উদ্যোগ প্রসঙ্গে মিলন চাকমা বলেন, “আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে আদিবাসীদের জীবন সংগ্রাম, ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ও অধিকার হারানোর গল্পগুলো সবার মাঝে তুলে ধরার প্রয়াসে প্রতিবছর বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, বিহু, বিষু ও চাংক্রান উপলক্ষে “হাজলং” নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনও প্রকাশ করে থাকি। তাছাড়া ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতিকে তুলে ধরার প্রয়াসও চালিয়ে থাকি।”

এ প্রসঙ্গে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী অংক্যহ্লা খুমি বলেন,  “প্রথমত আমি ‘খুমী’ আদিবাসী পরিবারে একজন সদস্য। আমরা জনসংখ্যাগত ও জাতিগত দিক দিয়ে কম হলে ও আমাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা, রয়েছে বর্ণমালা,রয়েছে পোশাক এবং নিজস্ব সংস্কৃতি। আমাদের নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে শিক্ষা হতে পারে বড় হাতিয়ার। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে খুমি সম্প্রদায় থেকে আমিই একমাত্র শিক্ষার্থী।আমাকে প্রতিনিয়ত চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও বাঙালি বন্ধুদের সাথে বাংলা ভাষায় কথা বলতে হয়। ফলে নিজের ভাষা চর্চার সুযোগ একেবারেই পায় না । যেহেতু আমার মাতৃভাষা খুমী, তাই আমাকে অনেক সময় বাংলা ভাষা বলার ক্ষেত্রে সঠিক উচ্চারণের কিংবা অন্যান্য সমস্যা  সম্মুখীন হতে হয়।”

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুচনা ত্রিপুরা বলেন,”কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হল সংকটের কারণে আমি ও আমার মত নবীন শিক্ষার্থীদের নানারকম ভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।  বিশেষ করে তিন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আসা জুম্ম শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে ভাষাগত পার্থক্যের কারণে আমাদের অনেক সময় নানা হাসি ঠাট্টার শিকার হতে হয়। চেহারাগত পার্থক্যের কারণে অনেকে বিদ্রুপও করে থাকে।”

তবুও মানিয়ে নেওয়াঃ

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগে অধ্যয়নরত চান্দাওয়াং মারমা আক্ষেপের সুরে বলেন, “আমার মাতৃভাষা মারমা। বাংলা ভাষা মারমা ভাষা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পযর্ন্ত আমার ভাষাগত সমস্যার কারণে বিভিন্ন সময়ে কটুক্তির শিকার হয়েছি। মাতৃভাষা না হওয়ায় বাংলা ভাষা সঠিক উচ্চারণের ক্ষেত্রে আমাদের আদিবাসীদের মধ্যে কিছুটা সমস্যা হবে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু বাংলা উচ্চারণ স্পষ্ট না হওয়ার কারণে অনেকেই আমাদেরকে নিয়ে হাসাহাসি করে। কখনো কখেনা বিভ্রান্তিকর প্রশ্নেরও সম্মুখীন হতে হয়। আরেকটা বড় সমস্যা হচ্ছে খাবারের। আমাদের আদিবাসীদের খাবার বাঙালিদের থেকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা। চেহারা নিয়েও অনেকসময় ঝামেলা পোহাতে হয়! অনেকেই এমনভাবে তাকিয়ে থাকে যা খুবই বিব্রতকর। এভাবে ভাষা, নাম, চেহারা এসব নিয়ে নানারকম ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, হাসি-তামাশার শিকার হতে হয়। তবুও আমরা মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করি।”

সিট সংকট ও মানিয়ে নেওয়ার লড়াইঃ

ভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল থেকে উঠে এসে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের সাথে পড়াশুনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার এক নতুন লড়াইয়ে যুক্ত হন এই ক্যাম্পাসের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা। তার মধ্যে প্রথম যে সমস্যার মুখোমুখি হন তা হল সীট সংকট। এ প্রসঙ্গে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুচনা ত্রিপুরা বলেন, “আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে হলে সিট পেতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ক্যাম্পাস লাইফে ১ বছর পেরিয়ে ২ বছরে পা দিলাম তাও এখনো গণরুমে থাকতে হচ্ছে। হলের বাইরে থাকলে নিরাপত্তা থাকেনা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদেরকে প্রয়োজনীয় আবাসন সুবিধা দিতে পারে না। যদিও সম্প্রতি আমাদের জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে একটি রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা আমাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। যদি অন্তত পক্ষে প্রতিটি হলে একটা করে রুম বরাদ্দ পাওয়া যেত তবে আমরা আদিবাসী শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হতাম।”

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগে অধ্যয়নরত চান্দাওয়াং মারমা বলেন, “সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবাসন সমস্যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এ সমস্যা আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য আরো প্রকট।

আদিবাসী শিক্ষার্থীদের গেটটুগেদার।

“সমতল আদিবাসী ছাত্র সংগঠনঃ”

এদিকে পার্বত্য অঞ্চল বাদেও দেশের সমতল জেলাগুলো থেকে বহু আদিবাসী শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্বিবদ্যালয়ে পড়তে আসে। সমতল অঞ্চলের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলেছেন ” সমতল আদিবাসী ছাত্র সংগঠন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।”

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে অধ্যয়নরত সমতল অঞ্চলের আদিবাসী শিক্ষার্থী কুপুরাম হাসদা রাহুল সমতল অঞ্চলের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ন্যায় প্রতি বছর সমতল অঞ্চল থেকে বহু আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত সমতলের আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে  শিক্ষার প্রসার, পারস্পরিক ভাতৃত্ববোধ, ঐক্যের বন্ধন ও সামাজিক সহায়তার লক্ষ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন সমতল আদিবাসী ছাত্র সংগঠন গঠিত হয়েছে। বর্তমানে সমতলের আদিবাসী মধ্যে সাঁওতাল, মুন্ডা, ওঁরাও, মাহাতো,পাহাড়ি, মালো, পাহান, রাজবংশী, গারো, কোচ,  রাজবংশী, মণিপুরি, খাসিয়া ইত্যাদি জনগোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া  করে।

তিনি আরো বলেন, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানরত সমতল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করা এবং সমতল অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া সমতল ছাত্র-ছাত্রীদের পরিকল্পনা গ্রহণ করে শিক্ষা ও আত্ম-সামাজিক উন্নয়নের সহায়তা করা সংগঠনের মূল লক্ষ্য। “সমতল আদিবাসী ছাত্র সংগঠন ” ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসের ১০ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠানকালীন সভাপতি  ছিলেন সন্জিত কিস্পট্যা ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব তির্কী প্রিন্স। বর্তমান সভাপতি স্বপন টপ্য ও সাধারণ সম্পাদক নিতাই পাহান।

সীট সংকটই সাধারণ সমস্যাঃ

সমতলের শিক্ষার্থীদের নানা সংকট নিয়ে সংগঠনটির নেতারা বলেন,  “বিশ্ববিদ্যালয়ের এসে আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। তার মধ্যে ভাষাগত অমিল, বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সহজে খাপ খাওয়াতে না পারার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিট না পাওয়ার চ্যালেঞ্জ। নতুন একটি পরিবেশে নানা সংকটের সাথে তাল মেলানো আমাদের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য।

হলে সিট সংকট নিয়ে তারা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিট পাওয়ার ক্ষেএে অনেকে রাজনৈতিকভাবে সিট পেতে সমস্যা হয়। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো সিট পাওয়ার জন্য হলের তথাকথিত ‘বড়ভাইদের’ পিছনে ঘোরাফেরা করতে হয়। তারপর ও সিট পাওয়া যায় না। আবার যখন সিট পাওয়া যায় তখন সিট মেলে গনরুমে। হঠাৎ করেই নিজের সংস্কৃতি ও নিজের জনগোষ্ঠীর থেকে আলাদা হয়ে গনরুমে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমাদের বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। সাংস্কৃতিক ভিন্নতার কারণে আমরা প্রতিনিয়তই বৈষম্যের শিকার হই।

আদিবাসী দিবসঃ স্বকীয় সংস্কৃতি প্রসারের উপলক্ষ্যঃ

৯ আগষ্ট আদিবাসী দিবস আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। এই দিবসটিকে কেন্দ্র করেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নানা ধরণের আয়োজনের মধ্য দিয়ে নিজেদের স্বকীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন আদিবাসী শিক্ষার্থীরা। প্রচার করেন নিজেদের ভিন্নতাকে। এ প্রসঙ্গে স্বপন টপ্য ও নিতাই পাহান বলেন, “আমরা র‌্যালী ও সভা-সমাবেশে করে থাকি, এই দিবসে আমরা আলোচনা সভার মাধ্যমে আদিবাসীদের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ভাষা-ঐতিহ্য,সংস্কৃতি, নিজেদের টিকে থাকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়। আদিবাসী দিবস আদিবাসী জাতির পরিচিতি বৃদ্ধি এবং সংস্কৃতি রক্ষায় একমাত্র পন্থা।যা নতুন প্রজন্মকে তার জাতি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবাধ জ্ঞান আহরণে সহায়তা করবে।আদিবাসী দিবস পালনের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতি চর্চা বৃদ্ধি পাবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। যেটি আমাদের সংস্কৃতি রক্ষায় ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে।তাই প্রতিবছর আমরা ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে  আদিবাসী দিবস উৎযাপন করে থাকি।

প্রক্টর অফিসে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা।

প্রশাসনের কাছে দাবিঃ

সাংস্কৃতিক ভিন্নতা, সিট সংকট, বিদ্রুপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া থেকে শুরু করে নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আদিবাসী শিক্ষার্থীরা কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে জুম্ম ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি মিলন চাকমা বলেন, “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিবছর প্রশাসন আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য কোটায় মাত্র ১৫টি সিট বরাদ্দ রেখেছে। এই সংখ্যা যদি আরো বৃদ্ধি করা হয় তবে আমাদের জন্য খুব ভালো হয়।এতে এই ক্যাম্পাসে আদিবাসী শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। যা উচ্চ শিক্ষায় আদিবাসীদের অংশগ্রহন বৃদ্ধি পাবে এবং ক্যাম্পাসে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের পদচারণা আরো প্রসারিত হবে।

সীট সংকট সমাধানে তিনি আরো বলেন, “যেহেতু আমাদেরকে নতুন একটি পরিবেশের সাথে খাপ-খাইয়ে নিতে হয়। তাই আমাদেরকে যদি ভর্তি হওয়ার সাথে সাথেই সীট বরাদ্দ দেয়া হয় তবে পড়াশুনা চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে যাবো। এক্ষেত্রে অন্তত আমরা যারা ভিন্ন সাংস্কৃতিক আবহ থেকে এই ক্যাম্পাসে আসি তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালেয় প্রশাসনের উচিত আরো অধিকতর যত্নশীল ভূমিকা নেওয়া।”

Back to top button