’৫২ এর শহীদদের প্রতি একুশের প্রথম প্রহরে পিসিপির শ্রদ্ধাঞ্জলী
সতেজ চাকমাঃ ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে শাহদাৎ বরণকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ রাঙ্গামাটি,বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন স্থানে শ্রদ্ধা জানিয়েছে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় ও শাখা কমিটি সমূহ। একুশের প্রথম প্রহরে পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নিপন ত্রিপুরার নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রিবেং দেওয়ান সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ের নেতৃবৃন্দ ও ঢাবিতে পড়ুয়া বিভিন্ন বিভাগের জুম্ম শিক্ষার্থীরা।
এসময় আইপিনিউজকে পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা বলেন, পাহাড় তথা সমতলের সকল আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষাগুলো রক্ষার জন্য রাষ্ট্রের যে উদ্যোগ তা একেবারেই নগন্য। নিজ মাতৃভাষা রক্ষার দাবীতে প্রাণ দেওয়ার গৌরব যে জাতির রয়েছে সে জাতির শাসকেরা স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরেও তাঁর দেশের অপরাপর আদিবাসী ভাষা সমূহকে এখনো রক্ষার ব্যবস্থা তো করতেই পারেনি উপরন্তু এসব ভাষাগুলো যথাযথ স্বীকৃতিও এখনো মেলেনি।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একুশে ফেব্রুয়ারী উপলক্ষ্যে আদিবাসী বর্ণমালা’র সভাযত্রা সহকারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধে একুশের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধ জানিয়েছে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি আশুতোষ চাকমা এবং সাধারন সম্পাদক শ্রাবণ চাকমা’র নেতৃত্বে উক্ত আয়োজনটি সম্পন্ন হয়। পাহাড়ী ছত্রি পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেন চাকমা আইপিনিউজকে জানান, একুশে ফেব্রুয়ারী’র চেতনা কেবল বাংলা ভাষা রক্ষার চেতনা নয়। এই একুশের শহীদদের আত্মত্যাগের চেতনা বাংলাদেশের অপরাপর আদিবাসীদের ভাষাগুলো রক্ষারও ।কিন্তু রাষ্ট্র এখনো এদেশে যে অপরাপর আদিবাসীদের ভাষা ও সে ভাষা সমূহের বর্ণমালা রয়েছে সেগুলো রক্ষার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি । যার জন্য এসব ভাষা ও বর্ণমালাগুলো রক্ষা’র জন্যই আমাদের এই বর্ণমালা সভাযাত্রা সহকারে একুশের শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোর আয়োজন।
এদিকে বান্দরবানেও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়েছে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ বান্দরান জেলা শাখা। বান্দরবান জেলা শাখার সভাপতি থোয়াক্যজয় চাক এর নেতৃত্বে বান্দরবান জেলার পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।পিসিপি’র বান্দরবান জেলা শাখার সভাপতি থোয়াক্যজয় চাক মুঠোআলাপে আইপিনিউজকে বলেন, ১৯৫২ সালে বাঙালিরা যে আন্দোলন করেছিল তা রাংলা ভাষাকে রক্ষার জন্য। কিন্তু ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এই দিবসকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার মূল লক্ষ্য হল সকল ভাষাকে রক্ষার জন্য সচেষ্ট থাকা এবং সকল ভাষাকে সম্মান প্রদর্শন করা।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে আদিবাসীদের ভাষাগুলো রয়েছে সে ভাষাগুলো রক্ষার জন্য রাষ্ট্রের উদ্যোগ একেবারেই অপ্রতুল। ২০১৭ সাল থেকে সরকার কেবল মাত্র ৫ টি আদিবাসী মাতৃভাষায় (পাহাড় ও সমতল) প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু বাকী যে আদিবাসী ভাষাগুলো রক্ষার জন্য সরকারকে অনতিবিলম্বে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ারও দাবী জানান পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলার সভাপতি।এদিকে রাঙ্গামাটির তবলছড়িস্থ শহীদ মিনারেও পিসিপি’র স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা জনিয়েছে।