মতামত ও বিশ্লেষণ

সাজেকে হামে আক্রান্ত শিশু, ভাগ্য বিড়ম্বিত বিজু এবং কিছু কাকতালীয় প্রশ্নের এলোমেলো উত্তর: সতেজ চাকমা

প্রায় শেষ বসন্তের হাওয়া বইছে পাহাড়ে। কোকিলও ডাকছে রীতিমত। চৈত্রের প্রখর রৌদ্রে জুমে হাওয়া বইছে। লাল শিমুল রঙ ছড়াচ্ছে বিস্তৃত বনে। ভাতজরা, ছদরক ফুলও ফুটেছে পাহাড়ের ঢালে ঢালে। এইসবই তো বিজুর রঙ, পাহাড়ী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার অনুষঙ্গ।কিন্তু যখন চলটি লেখাটি লিখছি তখন সবাই বাধ্যগত অবসরে।কেউ বাহিরে নেই। সারা পৃথিবীটাকে জাপটিয়ে ধরেছে করোনা আতঙ্ক।চীনের উহান শহরের কোভিড-১৯ এর উত্তাল ঢেউ বুজি এই পাহাড়েও হানা দিয়েছে। সারা ইউরোপ জুড়ে কেবল লাশের ভারী গন্ধে বাতাস মাতাল হয়ে উঠেছে। স্পেন, ইতালি,ফ্রান্স আর আমেরিকা সহ পুরো পৃথিবীটাই নিস্তব্ধ।ইতালি,স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে প্রতিনিয়ত লাশের মিছিলের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যে ব্রিটিশ এই উপমহাদেশ সহ পুরো পুথিবী জুড়ে একসময় শাসন করেছিল, উপনিবেশ গেড়েছিল সেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনশনও এই করোনার ভারে নুহ্য। কেবল তিনি নন, তাঁর স্বাস্থ্যমন্ত্রীও। এ লেখাটি লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশে নিশ্চিত রোগীর সংখ্যা ৪৮।আইইডিসিএর এই করোনা মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। নানা মহলে এ নিয়ে সমালোচনা আছে।এ করোনাকে মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ’একুইপমেন্ট’ আসলে হাতে নেই। যা আছে তা অপর্যাপ্ত।অনেকের মতে সরকারের পলিসি ’কম টেষ্ট,কম রোগী।’ তাই তো মীরজাদী সেব্রিনা ম্যাডাম যখনি সংবাদ নিয়ে সম্মেলনে আসেন তখন অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবিশ্বাসের হাসি হাসেন। সতর্কতা আর সচেতনটাই মূল ভরসা। এ কোন কঠিন গতিতে পৃথিবীটা প্রদক্ষিণ করছে সূর্যের চারিপাশ, কেউ বলতে পারছে না। সবাই বলছে সাবধানে সতর্কভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাতে।ভারতে চলছে একুশ দিনের লকডাউন। তেমনিভাবে বাংলাদেশেও গত ২৪ মার্চ থেকে দশ দিনব্যাপী লকডাউন চলছে। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো পাড়ায় চলছে নিজস্ব রীতিতে লকডাউনিং।এ গ্রাম থেকে ও গ্রামে যাওয়ার রাস্তায় পুতে দেয়া হয়েছে বাঁশের ঘন খুঁটি।এ প্রতীকি লকডাউনিং এর দৃশ্যমান জায়গায় ক্রামা বর্ণমালায় লেখা হয়েছে সাবধানতা সূচক কিছু বাক্য। চাকমা’রা চৈত্রের সংক্রান্তির এই উৎসবটিকে বিজু বলে জানলেও ম্রো’রা জানে চাংক্রান নামে। চাংক্রান অর্থও সংক্রান্তি। নতুন জীবনের অবগাহনে ঢেলে সাজানোর প্রত্যয়।কেবল ম্রো রা নই, যতদূর জানি পাহাড়ের প্রত্যেকটি জনগোষ্ঠী তাদের স্ব স্ব নিরাপত্তার খোঁজে এই লকডাউনিং মেনে চলছে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত থেকে শুরু করে শহর এলাকায়ও মানুষ জবুথবু হয়ে ঘরে বন্দী রয়েছেন।বের হওয়াটাই বিপদ।

এদিকে সাজেকের রংহীন পাহাড়ের গহীনে হানা দিয়েছে- হাম।কেবল সাজেক নই, লামায়ও একই রোগে আক্রান্ত পাহাড়ী শিশু।এটি তো পুরাতন রোগ।যার টিকাও আবিষ্কৃত হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু এই টিকা আটকপালে সাজেকের সেই শিশুরা এখনো পায়নি।রঙিন বাহারী কটেজ তৈরীর কংক্রিট আর সেই বাহারী কটেজে বিলাসী রাত্রি যাপনের জন্য সমতল জেলাগুলো থেকে মৌসুমী পর্যটকের নিরবিচ্ছিন্ন স্রোত সেই সাজেকের কংলাক,রুইলুই পাহাড়ে আছড়ে পড়লেও এই সাজেকের মেঘের কান্নার ভিড়ে যাপন করা শিশুরা যেন রাষ্ট্রের বিমাতা সুলভ আচরণে সর্বদায় বঞ্চিত।এই বঞ্চিত শিশু বনাম রাষ্ট্রের দায় আর দায়িত্বের সমীকরণ যদি মেলাতে চাই তাহলে সর্বদায় নেগেটিভ এসে যাবে।একদিকে সেই সাজেকের গহীন(এখন আর নেই) পাহাড়ে যারা ছিল তাঁদেরকে তাড়ানো হয়েছে এই বাহারী রিসোর্ট আর কটেজ স্থাপনের তাড়নায় অনেক আগেই।আর যে পাহাড়ে আগে এই চৈত্রের প্রখর রৌদ্রের মধ্যেও জুমের কাজে দেখা মিলত পাহাড়ীর হাতে বোনা ছোট্ট জুমঘর ।আর সেই জুমঘরকে কেন্দ্র করে বার্ষিক অন্ন সংস্থানের জন্য জুম চাষ হত ঘন বনানী বিস্তৃত এই সাজেকে। সেই সাজেক এখন হাহাকার করছে পর্যটকের বিলাসী বন্যায় আর রঙিন বাহারী কটেজের আগ্রাসনের নির্মমতায়। কোভিড-১৯ এর সতর্কতায় যদিও এখন সাজেক একটু স্বস্তি পাচ্ছে কিন্তু হামে আক্রান্ত সাজেক রীতিমত বিধ্বস্ত।যতদূর জানি এই সাম্প্রতিক সাজেকে এই হামে আক্রান্ত শিশু মারা পড়েছে ৮-১০ জন। এই সংখ্যাটা পুরো বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকরী (সরকারী) সংখ্যার তুলনায় প্রায় দ্বিগুন বেশি।কিন্তু একচোখা গণমাধ্যম এক্ষেত্রে বেশ বোবা। দু’একটা গণমাধ্যমে এ খবর আসলেও অধিকাংশই এ নিয়ে অগণিত মিনিটের নিরবতা পালন করছে।কিন্তু কোনো মৃত্যুই তো সুখকর নই।যে শিশুরা অন্তত এই সময়ে হেসে খেলে গহীন সাজেকের পাহাড় চূড়া থেকে নেমে আসা ঝিরি বা ঝরনার পানিতে গা ভাসিয়ে চৈত্র্যের এই কড়া রৌদ্র থেকে রেহায় পাওয়ার প্রত্যাশায় পানির প্রবাহমান স্রোতে ভেসে স্বাচ্ছন্দে দিন কাটানোর কথা ছিল আর সেই সাথে একটু একটু বিজুর আমেজে মুখর থেকে রীতিমত একটা প্রস্তুতিতে সমসাময়িকদের সাথে আড্ডামুখর বেলায় দাংগা বা গুদু হারা’য় মত্ত থাকবার কথা ছিল সেই শিশু এখন এই হামে মৃত আর আক্রান্ত। সুতরাং একদিকে কোভিড-১৯ এর ধাক্কায় সবাই সামাজিক দূরত্ব নিয়ে অবসরে আতংকে দিন কাটাচ্ছে আর অন্যদিকে পাহাড়ী শিশুর হাতে পায়ে হামের লাল লাল গুটি।এই কোভিড-১৯ এবং হাম কেবল পাহাড়কেই আক্রান্ত করেনি, এই হাম কেবল পাহাড়ী শিশুকেই দমায়নি, আসন্ন বিজুকেও করে তুলেছে বিষণ্ন, অনিশ্চিত আর গোমড়ামুখো। তাই এই কিছু কাকতালীয় প্রশ্ন নিয়ে কিছু এলোমেলো উত্তর সাজাতে এই লেখা।

আপনি!যিনি এই লেখাটি পড়ছেন।কখনো খেয়াল করেছেন। এই আমাদের রঙিন বিজুর প্রাক্কাল মুহূর্তটাকে কখনো সচেতন বা অবচেতন ভাবে খেয়ালে নিয়েছেন। আমি কিন্তু নিয়েছি। বিজু,সাংগ্রাই,বৈসু,বিহু,বিষু,চাংক্রান- যে যে নামেই ডাকি না কেন, এর মাহাত্ম আর আয়োজন ও উদ্দেশ্যের চল কিন্তু মূলত একই। চৈত্র্যের সংক্রান্তি আর নতুন বছরের আগমন। সমস্ত বেদনা,অপমান,,লাঞ্চনা,বঞ্চনা আর জুমের পরিশ্রমী কাজ ফেলে এই ক’দিন মেতে ওঠা।পাহাড়ে চাকমা সমাজে আদাম (গ্রাম) এলাকায় অনেকেই অনেক শিশুদের আদর করে ’ফাগুন্যে’ বলে ডাক দেয়। এ নামটির সাথে ফাগুন মাসের চরিত্রের একটি যোগসূত্র আছে। ফাল্গুন-চৈত্র্য এলে পাহাড়ে প্রচুর বাতাস বয়। আর এসময়েই ফুটতে থাকে যত বুনোফুল। কোকিলের কন্ঠ তো আছেই। কড়া রোদ থাকলেও পাহাড়ী মানুষ জুমের কাজে নেমে পড়ে জুম পোড়ায় ঠিক এই সময়েই। জুমের চূড়ায় ‘পিবির পিবির বোয়ের’এ অর্থাৎ এলো বাতাসে নিজেদের গা এলিয়ে দেয়। এই এলো বাতাসে পাতারা নেচে ওঠে। নতুন পাতা গজায়। গত হওয়া শীতের রুক্ষতা আর প্রকৃতির যে জীর্ণতা সবকিছু ছাপিয়ে এক ধরণের শিহরণ অনুভব হয় এই সময়েই।কাজেই প্রকৃতি বলুন আর এই প্রকৃতির কোলে আজন্ম লালিত পাহাড়ী মানুষদেরই বা বলুন এই সময়ে সবাই একটু ফুরফুরে মেজাজেই থাকে। অধীর আগ্রহে চেয়ে থাকে বিজুকে ঘিরে। এই বিজু উৎযাপনের মাধ্যমেই তারা নতুনভাবে শপথ নেয়। আগামীতে জীবনকে আরো নব উদ্যোমে সাজাবে। কিন্তু কেন জানি কাকতালীযভাবে মনে হয়েছে এই বিজু বার বার সংকটের মুখে পড়েছে। সেটা প্রাকৃতির হোক আর মনুষ্য সৃষ্ট হোক।সে ভাবনা থেকেই মূলত এই লেখা।

মনে আছে!১৯৮০ সালের ২৫ শে মার্চের কাউখালীর কলমপতির কথা।বাঙালির ২৫ শে মার্চ এসেছিল ১৯৭১ এ। কী জঘন্যভাবে পাকিস্তানিরা তান্ডব চালিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতাউত্তর সময়েও পাহাড়ী মানুষ ২৫ শে মার্চ দেখেছিল। তবে তারা রাতে নয় দিনে দুপুরে এই গণহত্যার শিকার হয়েছিল।পৃথিবী ব্যাপী চলমান এই দু:সময়ে অন্তত এ কথা স্মরণে না আনায় উত্তম।সেটলার আর নিরাপত্তার পোশাকী বাহিনীর দ্বারা এই সংঘটিত গণহত্যার ঠিক কয়েকদিন পরেই তো ছিল বিজু। এপ্রিলের মাঝামাঝিতে বিজু রঙ ছড়ায় পাহাড়ে পাহাড়ে। কিন্তু এই ক’দিন আগে যদি রক্ত বন্যায় ভেসে যায় কারোর মা-বাবা, ভাই-বোন, পিসি,মাসি,জেঠা বা অন্য কোনো জ্ঞাতী স্বজন তাহলে সে বিজু কী খুব সুখের হয়! তা নিশ্চয় নয়। এই ঘটনার পর আরেকটি ঘটনা আরো বেশি শিহরণ জাগিয়ে দিয়েছিল পাহাড়ী মানুষকে ।সে ‘বিজগ’ (ইতিহাস) মনে থাকবার কথা অন্তত খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির মানুষদের। ১৯৯২ সালের ১০ এপ্রিল।লোগাং গ্রামে কী ঘটেছিল। বিজু শুরু হয় সচরাচর ১২ এপ্রিল থেকে। চলে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। যখনি পাহাড়ের মানুষ ফুলের পরিত্রতায় শুদ্ধ জীবনের পথে হাঁটার চেষ্টা করে আর চেঙে,মেউনি,লোগাং,কাজলং বা বরগাং এর স্বচ্ছ জলে নিজেদেরকে ধৌত করে পুত:পবিত্র জীবন রচনা করতে যাই ঠিক তার আগেই তো এই পাকিপনা পাহাড়ে এসে ধরা দেয়। তখন বিজু তার আপন রঙ হারায়। মূল বিজুর পাঁজন তখন চুলার উনুনে গর্জে ওঠে আর লোগাং এ ভাই হত্যার প্রতিবাদে চেঙে নদীর অথৈ জলে এ পাজন বিদ্রোহ করে। যে বিজু ছিল সুখের আর নিশ্চিন্তহীন নিরাপত্তায় উৎযাপনের, সেখানে সেটলার বাঙালির দায়ের কোপ আর নিরাপত্তার মেকি ড্রেস পড়া বাহিনীর ভয়ে মানুষ গহীন জঙ্গলে নিরাপত্তার খোঁজ নেয়। এভাবে আসলে বিজু হয়না।

‘গোজ্জোপোজ্জে’ দিন বলে চাকমা আদিবাসীদের একটি দিন আছে। এটা বিজুর একটা অংশ।তিন দিন ব্যাপী চলা বিজুর শেষ দিন। এই দিনটির অর্থ যা বুঝায় সেটা হলো, নিজেদের বানানো দোচুয়ানী (মদ), মিষ্টি জগড়া আর ‘হানজি’ (কম পরিমাণ অ্যালকোহলের মদ) খেয়ে চিন্তাবিহীনভাবে মাতাল হয়ে গা গড়িয়ে পড়ে থাকা।কিন্তু যখন রাত্রিবেলায় বিদ্যুৎহীন প্রত্যন্ত গ্রামে কোনো গেরস্তের উঠানের কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করে ডেকে ওঠে তখন আর পাহাড়ী গেরস্তের হৃদপিন্ড ভালোভাবে বাজতে পারে না।সন্দেহ আর ভয়ে কাপতে থাকে জীবন। কখন কোনো বাহিনী এসেছে কীনা। এই অবস্থায় বিজু অর্থহীন। আমার এখনো মনে আছে ছোটকালে গ্রামে বড় হওয়া এই লেখক যখন সঙ্গ জড়িয়ে বিজুর পাজন খেতে যাই গ্রামের এ বাড়ী ও বাড়ী, তখন বাবা-মায়ের একটা হুশিয়ারী থাকে। “বেশি রাত হয়ে থেকো না। আর্মি আসবে যদি।” এই আতংকের শৈশবকে কী আর ভোলা যায়? সত্যিই ভুলতে খুব কষ্ট।

চুক্তিউত্তর সময়ে তেমন কোনো গণহত্যা পাহাড়ী মানুষ না দেখলেও দেখেছে ভয়ার্ত রাত আর নিদ্রাহীন অনিরাপদ জীবন। এখনো সেটা চলমান।এই বিজু আসার ঠিক কয়েকদিন আগেই কুখ্যাত জালিয়াপাড়ার ঘাতক সেটলাররা জড়ো হয়। নতুবা কোনো পাহাড়ী গ্রাম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।লংগদুর তিনতিলা,বাত্যেপাড়া,মানিকজোরছড়া পুড়ে যায়। কোনো না কোনো সহিংসতা ঘটতে থাকে বিজু প্রাক্কাল মুহূর্তে। আর এবছর ঠিক এই মুহূর্তে কোভিড-১৯ আর হাম’কে সাথে নিয়ে পথ চলছে পাহাড়ী মানুষ। সেই সাথে নিয়মিত নানা ভাইরাসের ভয়তো আছেই। এই করোনার দিনগুলিতে সবাই হয়ত ভাবছে বিজুর কথা। এই বিজুকে ঘিরে এখন গ্রামে গ্রামে কলরব থাকবার কথা। মাইক আর সাউন্ড বক্সগুলো নানা পাহাড়ী গানে মাতোয়ারা হয়ে গায়বার কথা। কত খেলাধুলা আয়োজন হবার কথা। লাকী কুপনের আয়োজন, হারু খেলা বলতে একটা অভিনব খেলায় মাতিয়ে রাখবার কথা। কিন্তু এই দিনে বিজু নিতান্তই অনিশ্চিত। রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের জীবন,উৎসব,হাসি,আনন্দ সহ সাজেক ও লামার পাহাড়ী শিশুর শৈশবকে নিরাপদ করবার যে দায়িত্ব রাষ্ট্রের কাঁধে আছে তা কেবল সংবিধানের পাতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। হামে আক্রান্ত যে শিশুটির শৈশবকে নিরাপদ করবার কথা যে রাষ্ট্রের সে রাষ্ট্রকে কীভাবে এ নিয়ে প্রশ্ন করতে পারি।যেখানে অবাধে হামে আক্রান্ত সাজেকের শিশু মারা পড়ছে এ রাষ্ট্রীয় সীমানায়। তাই করোনা,হাম,বিজু, পাহাড় এবং সবকিছুর উর্দ্ধে মানুষের উপর এই আধুনিক রাষ্ট্রের যে দায় থাকবার কথা সে প্রশ্ন কাউকে করতে না পেরে নিজেকেই করলাম।করোনার এই দিনগুলিতে কেবল সবার নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায়ে, আত্মার মিলনের মাধ্যমে সতর্ক আর সচেতনতায় এই কোভিড-১৯ কে জয় করতে পারার আশা জানান দিতে পারি।তাই পূর্ণ অবসরের এই সময়ে পাহাড়ী মানুষের আসন্ন অনিশ্চিত বিজুকে ঘিরে চলমান ভাবনায় ইতিহাসের কিছু সহজ স্বীকারোক্তি প্রকাশই এ লেখার মূল উপজীব্য। হামে আক্রান্ত সাজেক এবং লামার সেই পাহাড়ী শিশুর জীবন ও শৈশবকে নিরাপদ করতে এবং পাহাড়ী মানুষের বিজু,বৈসু,সাংগ্রাই,বিহু,বিষু,চাংক্রান এর আনন্দকে নিশ্চিত করার জন্য করোনা ভাইরাস সহ পাহাড়ের সকল বিধ্বংসী ভাইরাস নিমূর্লের দায় রাষ্ট্রের উপর দিয়ে চলটি লেখা থেকে হাত গুটিয়ে নিলাম।
……………………………………………………
সতেজ চাকমা, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আদিবাসী অধিকারকর্মী।

Back to top button