জাতীয়

বাস্তুভূমি থেকে উচ্ছেদের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কক্সবাজারে রাখাইন সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে চট্টগ্রাম কক্সবাজার উপকূল সুরক্ষায় বেরিবাঁধ নির্মাণ কাজের জন্য নির্ধারিত জায়গার মধ্যে শত শত বছর ধরে অবস্থান রত ১০০ রাখাইন পরিবারের দিন কাটছে উচ্ছেদ আতংকে। জানা যায়, উক্ত নির্মাণ কাজের জন্য কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড ১০০ রাখাইন পরিবারের একটি তালিকা তৈরী করেছে যাদেরকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।উপকূল সুরক্ষায় সরকারের এ উদ্যোগ নিচ্ছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এরই প্রতিবাদে গতকাল রবিবার (২০ জানুয়ারী) বাংলাদেশ রাখাইন স্টুডেন্ট এসোশিয়েশন ও স্থানীয় রাখাইন সম্প্রদায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

উক্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, নির্ধারিত জায়গায় সুপার ডাইক নির্মাণের ফলে শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যের সাথে বসবাস করা রাখাইনদের বসতি উচ্ছেদ হয়ে যাবে।যার ফলে এ অঞ্চলে রাখাইন আদিবাসীদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

বক্তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, তারা বিগত ১৩ জানুয়ারী কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারক লিপি পেশ করেছেন।তাতেও প্রশাসন কোনো ধরণের বিবেচনা আজও করেনি। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক যদি তাঁদেরকে উচ্ছেদ করা হয় তাহলে শত বছরের পুরাতন ৪ টি বৌদ্ধ মন্দির, ৩ টি শ্মশান বিলিন হয়ে যাবে যা তাঁদের পূর্বপুরুষরা যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে আসছে। যার জন্য তাঁরা আতংকে দিনাতিপাত করছে বলেও জানান সমাবেশের বক্তারা।

বাংলাদেশ রাখাইন স্টুডেন্ট এসোশিয়েশনের সাবেক সভাপতি ক্যাখিন রাখাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কক্সবাজার অঞ্চলের সাধারন সম্পাদক মংথেলা রাখাইন। তাঁর বক্তব্যে তিনি বলেন, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে প্রায় চার শত বছর ধরে শত শত রাখাইন পরিবার স্বকীয় ঐতিহ্য নিয়ে বসবাস করে আসছে।যদি সুপার ডাইক প্রকল্প এ জায়গায় বাস্তবায়ন হয় তবে তাঁদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই তিনি প্রশাসনকে বিকল্প জায়গা খোঁজার জন্য প্রশাসনকে আহ্বান জানান।

এছাড়া উক্ত সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যান ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সত্যপ্রিয় চৌধুরী, রাখাইন নেতা মংওয়ান রাখাইন, ক্যায়াইন রাখাইন, ক্যাছেন ওয়ান রাখাইন, ক্যাছেন মিন রাখাইন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে উক্ত দাবীতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন।

Back to top button