জাতীয়

জেএসএসের ৮ সদস্যকে কারাগারে প্রেরণ জনমনে ক্ষোভ

বিশেষ প্রতিবেদন: আদালতে জামিনে থাকা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ৮ জন সদস্য গত ১২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে বান্দরবান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছে। ২০১৬ সাল থেকে জামিনে থাকা দু’টি মামলায় হঠাৎ করে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের পেছনে স্থানীয় শাসকদল ও বিশেষ মহলের গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে জানা গেছে। এতে এলাকার মানুষ হতবাক হয়েছে, অনেকে জানিয়েছে চরম ক্ষোভ।

কারাগারে পাঠানো জনসংহতি সমিতির সদস্যরা হলেন জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জলি মং, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কে এস মং মারমা, আইন বিষয়ক সম্পাদক সাধুরাম ত্রিপুরা, বান্দরবান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ক্যাবা মং মারমা, জেলার সহ সভাপতি অংথোয়াইচিং মারমা, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শম্ভু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, সদর উপজেলা কমিটির ভূমি ও কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হেডম্যান মংপু মারমা, সদস্য চাইহ্লা মারমা প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনরত জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার হীনউদ্দেশ্যে শাসকদল ও রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্রে ২০১৬ সালে বান্দরবানে জনসংহতি সমিতির শত শত সদস্যদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম হলো চাঁদাবাজির ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে বান্দরবান সদর থানায় আবদুল করিম কর্তৃক ১ আগষ্ট ২০১৬ সালে জনসংহতি সমিতির ১১ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি মিথ্যা মামলা (মামলা নং জিআর ১৯৯/১৬) এবং মংসানু মারমা কর্তৃক ১৮ আগষ্ট ২০১৬ সালে জনসংহতি সমিতির ১৮ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আরেকটি সাজানো মামলা (মামলা নং- জিআর ২২৪/১৬)। এই দু’টি মামলার অভিযোগ ছিল সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন, সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক।

উক্ত দু’টি মামলাসহ বিভিন্ন সময়ে দায়েরকৃত মামলায় উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে জনসংহতি সমিতির সদস্যবৃন্দ নিয়মিত নি¤œ আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছেন। যেহেতু উক্ত দু’টি কথিত মামলা সাজানো ও ষড়যন্ত্রমলক, তাই ইতোমধ্যে ১লা আগস্ট দায়েরকৃত মামলার বাদী আবদুল করিম তার মামলা তুলে নেয়ার জন্য আদালতে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। অপরদিকে ১৮ আগস্ট দায়েরকৃত মামলার বাদী মংসানু মারমাও অভিযুক্ত জনসংহতি সমিতির সদস্যদের সাথে সমঝোতা করেছেন। বান্দরবান শহরে যে জায়গাটি কেন্দ্র মংসানু মামলাটি দায়ের করেন, সমঝোতার পর সেই জায়গাটি স্থানীয় আওয়ামীলীগের পক্ষে কৈশৈহ্লা ইতোমধ্যে কিনে নিয়েছেন। কিন্তু আবদুল করিম কর্তৃক মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন সত্ত্বেও ও মংসানু মারমা কর্তৃক সমঝোতার পরও পার্বত্য চুক্তি বিরোধী একটি প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্রে জনসংহতি সমিতির উক্ত সদস্যদের নাম উল্লেখ করে পুলিশ উক্ত দু’টি মামলার চার্জশীট আদালতে জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। উক্ত ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে গত ১২ জানুয়ারি স্থায়ী জামিনের জন্য বান্দরবান চীফ জুডিসিয়াল আদালতে হাজির হলে জনসংহতি সমিতির উল্লেখিত ৮ জন সদস্যকে আদালতের বিচারক কামরুন্নাহার তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

Back to top button