নেতা কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ঢাকায় পিসিপির মিছিল
আইপিনিউজ ডেস্কঃ জেএসএস নেতা উসচিং মারমা ও পিসিপি নেতা সুনীতিময় চাকমার মুক্তির দাবীতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে ১৬ জুন ঢাকায় এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুলভ চাকমার পরিচালনায় এবং ক্যারিংটন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য সুমন মারমা, হিল উইমেন ফেডারেশনের সভানেত্রী চঞ্চনা চাকমা, গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়নের ঢাকা সাধারণ সম্পাদক টনি ম্যাথিউ চিরান, জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মোস্তফা আলমগীর রতন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দীয় সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, দেশব্যাপী কয়েকদফায় অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সমগ্র দেশের যে চিত্র তা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের চিত্রটা ভিন্ন। পার্বত্য জেলাসমূহের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে জনসংহতি সমিতি সমর্থিত প্রার্থীদের জয় ছিনিয়ে নিতে সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হয়। জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাতেই ২৫টি আসনে জয়লাভ করে। কিন্তু রাঙ্গামাটি এবং বান্দরবানের কয়েকটি কেন্দ্রে সরকার দলীয় লোকজন পেশীশক্তি ও প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে কেন্দ্র দখল ও জোর জবরদস্তিমূলকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে দেয় নি। বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ছোট হরিণা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটি ২৫ বিজিবি এর সহায়তায় আওয়ামী লীগ দেখল করে নেয় । ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে এবং উক্ত কেন্দ্রে পুন:নির্বাচনের দাবিতে জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ জুন সড়ক ও জলপথ অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়। কিন্তু এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকার রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে জনসংহতি সমিতি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরসহ বেআইনীভাবে গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে।
বক্তারা বলেন, ১৪ জুন অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করার সময় সেনা বাহিনীর ১৩ বেঙ্গল এর দীঘলছড়ি জোনের জনৈক হাবিলদার মেজরের নেতৃত্বে ৯ জনের একটি সেনাদল পিসিপির বিলাইছড়ি উপজেলা শাখার অর্থ সম্পাদক সুনীতিময় চাকমাকে আটক করে। এরপর ঐ হাবিলদার মেজর মোবাইল ফোনে বিলাইছড়ি থানা পুলিশের কর্মকর্তা এসআই আক্তারকে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে আনে এবং আটককৃত সুনীতিময় চাকমাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
এদিকে বান্দরবান জেলার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বান্দরবান থানা শাখার সভাপতি উসচিং মারমাকে ১৪ জুন গভীর রাতে নিজ বাসা থেকে বিনা মামলা ও ওয়ারেন্টে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এখনো পর্যন্ত এই দুজন নেতাকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি; বরং মিথ্যা মামলা সাজিয়ে এই দুজন নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই দুজন নেতাকে গ্রেফতার করার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় এবং দুই নেতার বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবী জানানো হয়।