শেকল মুক্ত হলেন ধারতিআবাঃ মানিক সরেন
শেকল ছিঁড়ে গাই মুক্তির গান
আমরা তোমার সন্তান
ও বীরসা ভগবান
অধিকারের জন্য প্রয়োজনে দিবো জান
যতক্ষণ রবে দেহে প্রাণ
ও বীরসা ভগবান।
২ জুন ২০১৬ তারিখে ভারতের একটি সংবাদপত্রে বিরসা মুন্ডার (ধারতিআবা নামেও পরিচিত) সকল মূর্তিকে শেকল মুক্ত করার নির্দেশ জারির খবর দেখে সেদিন উপরোক্ত ছন্দটি লিখেছিলাম। এই নির্দেশ জারির পূর্বে বিরসা মুন্ডার অনেক মূর্তিতেই হাতে পায়ে শেকলের বেড়ী পড়ানো ছিল। ইংরেজ সরকারের কাছে গ্রেফতারের পর রাঁচী জেলে থাকাকালীন সময়ে বিরসার হাত পায়ে শেকল পড়িয়েই তাঁকে ও তাঁর সঙ্গীদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল। সেই ইতিহাস স্মরণ করেই ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত বিরসা ভগবানের মূর্তিতেও এতোদিন শেকল পরিহিত ছিল। কিন্তু এরকম একজন যোদ্ধা ও বীরের মূর্তিতে শেকল কেন থাকবে? এরকম বোধোদয় থেকেই ঝাড়খণ্ড সরকার সিদ্ধান্ত নেয় বিরসার যেসকল মূর্তিতে শেকল পড়ানো আছে সেগুলো অচিরেই খুলে ফেলতে হবে। ঝাড়খন্ডের মূখ্য মন্ত্রী রঘুবর দাস এ সংক্রান্ত নির্দেশ জারির পরে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বিরসা মুন্ডা ঝাড়খণ্ডের তরুণদের কাছে এক আলোকময় জ্যোতি, বিরসার মূর্তি শেকল পরিহিত থাকলে তাদের মনে নেতিবাচক ধারণা জন্মাতে পারে তাই বিরসার সকল মূর্তি শেকল মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ আমরাও ঝাড়খণ্ড সরকারের এ বোধোদয় ও সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
বিরসা ভগবানের একটি কথা যা আমাকে খুব নাড়া দেয় এবং অনুপ্রেরণা দেয় তাহলো ‘আমার অরন্য মাকে কেউ যদি কেড়ে নিতে চায়, আমার সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে কেউ যদি অন্য সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়, আমার ধর্মকে কেউ যদি খারাপ বা অসভ্য ধর্ম বলে, আমাকে কেউ যদি শুধু শোষণ করে নিতে চায় তবে আমি বিদ্রোহ করবই।’ বিরসা মুন্ডা এমন চিন্তা করতেন বলেই বোধহয় তার নেতৃত্বে ১৮৯৫-১৯০০ সালে উলগুলান (বিদ্রোহ) সম্ভব হয়েছিল। যে উলগুলান আদিবাসীদের দেখিয়েছিল জমিদার, মিশনারী, ইংরেজ শাসকদের হাত থেকে মুক্তির স্বপ্ন। বর্তমান এই সময়ে এসেও আদিবাসীদের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখে মনে হয় আবারো বিরসার দেখিয়ে যাওয়া পথেই হয়েতো এগিয়ে যেতে হবে। নতুবা আদিবাসী জীবন শেকল মুক্ত হবেনা।
৯ জুন বিরসা মুন্ডার ১১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯০০ সালের এই দিনে ইংরেজ শাসকদের বন্দীদশা অবস্থায় উলগুলানের নায়ক বিরসা মুন্ডা মারা যান। কিন্তু মরে যাওয়ার পরেও বিরসা আজ সকল মুক্তিকামী মানুষের কাছে এক কিংবদন্তী হয় বেঁচে আছেন। তাঁর নেতৃত্বে মুন্ডাদের উলগুলান দেখিয়ে দিয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশের আদি জনগোষ্ঠী আদিবাসীদের অসভ্য বলে, নীচ বলে ঘৃণ্য করলে তার পরিণতি ভালো হবেনা। প্রয়োজনে আদিবাসীরা বিদ্রোহ করবেই। এবং সত্যিকার অর্থেই বিরসার নেতৃত্বে উলগুলান সেই সময় ইংরেজ শাসকদের ভীত নড়িয়ে দিয়েছিল।
তৎকালীন ভারতের ছোটনাগপুরের সিংভূম, রাঁচি, পালামৌ জেলাগুলোতে মুন্ডাসহ অন্য আদিবাসীদের ঘনবসতি ছিল। ১৮৩১-৩২ সালের কোল বিদ্রোহ, ১৮৫৫-৫৬ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহের পর ভারতের আদিবাসী অধ্যুষিত জায়গাগুলোতে আবারো আদিবাসীদের উপর জমিদারদের অত্যাচার চলতে থাকে। আদিবাসীরা হিন্দি-উর্দু বুঝত না, ফলে আদিবাসীদের ঠকানো গেল খুব সহজেই। আদিবাসীরা নিজেদের গোষ্ঠীর বাইরের লোকদের ‘দিকু’ বলত। দিকু, ব্রিটিশ শাসক, জমিদারী প্রথা এসবই আদিবাসীদের কাছে আতঙ্ক হয়ে দাড়াল। আদিবাসীদের শুধু ঠকিয়ে, তাদের উপর অত্যাচার করে, তাদেরকে শুধু বেগার খাটিয়ে ইংরেজরা-জমিদাররা ক্ষান্ত হয়নি। আদিবাসী মুন্ডাদের মধ্যে তারা খ্রিষ্টধর্ম, হিন্দুধর্ম প্রচার করে তাদেরকে তাদের ধর্ম থেকে আলাদা করা হয়। এতে করে মুন্ডাসহ অন্যান্য আদিবাসীদের সমাজব্যবস্থা, সংস্কৃতি বিপন্ন হতে শুরু করে। অনেক মুন্ডাসহ অন্য আদিবাসীরা নিজের ধর্ম-সংস্কৃতি বিলিয়ে দিয়েও ধর্মান্তরিত হয়েছিল যাতে ধর্মান্তরিত হলে তদেরকে অত্যাচারিত হতে না হয়। কিন্তু ধর্মান্তরিত হবার পরেও আদিবাসীরা সেদিন রক্ষা পায়িনি। বিরসা মুন্ডার বাবা সুগানা মুন্ডা খ্রিষ্টান হয়েছিলেন। বিরসাও খ্রিষ্টান হয়েছিলেন। কিন্তু যখনই মুন্ডারা তাদের অধিকারের কথা বলেছে তখনই ইংরেজ সাহেব কি, জমিদার কি, আর মিশনারীরাই বা কি, কেউ তাদের অধিকারের কথা বলেনি। তাইতো বিরসা বলেছিলেন-“মিশনের সাহেব আর অফিসার সাহেব সবাই এক জাতের। সাহেব সাহেব এক টোপি হ্যায়।”
১৮৯৫ সালের দিকে বিশ বছরের যুবক বিরসা বুঝতে পারেন আর চুপ করে থাকলে চলবে না। মুন্ডাদের আদি ধর্ম থেকে কুসংস্কারটা বাদ দিয়ে তাদেরকে নতুন ধর্ম শেখাতে হবে। মিশন, সরকারী কর্মচারী, আদালত, জমিদার, মহাজন, ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ধর্ম শেখাতে হবে। বিরসা বলে উঠেছিলেন-“আমি বিরসা নই, আমি ধারতিআবা। এই পৃথিবী আমার সন্তান। আমি মুন্ডাদের নতুন ধর্ম শিখাবো। আমি তোদের কোলে নিয়ে ভুলাব না। দুলাব না। আমি মুন্ডাদের মরতে আর মারতে শিখাব।” বিরসা তার এই নতুন ধর্মে মুন্ডাদের দীক্ষিত করতে শুরু করেছিলেন। কানে কানে এই খবর চলে গিয়েছিল রাঁচির ডেপুটি কমিশনারের কাছে। তিনি বিরসাকে ধরার জন্য হুকুম দিয়েছিলেন। এদিকে মুন্ডারী ভাষায় অভিধান লিখে বিখ্যাত হয়ে ওঠা পাদ্রি হফম্যান ইংরেজ সরকারকে আভাস দেয় যে, বিরসা স্থির করেছে মিশনারীদের হত্যা করবে। শুরু হয় বিরসা মুন্ডাকে ধরার অভিযান। রাতের আঁধারে ধরা হল বিরসাকে। বিরসার বিচার হল। একতরফা বিচার। ইংরেজ শাসকদের সাজানো বিচারে বিরসার দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড হল।
বিরসার জেলে থাকা অবস্থায় মুন্ডা এলাকায় বৃষ্টির অভাবে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। কিন্তু এর মধ্যেও মুন্ডারা অপেক্ষা করতে থাকে কবে তাদের বিরসা ভগবান জেল থেকে বের হবে আর তাদের পথ দেখাবে। হাজারিবাগ জেলে বিরসা দীর্ঘ সময় থাকার পর ১৮৯৭ সালের ৩০ নভেম্বর সরকার তাকে মুক্তি দেয়। বিরসার মুক্তিতে মুন্ডাসহ আদিবাসী সমাজে উৎসবের আমেজ বসে। গ্রামে গ্রামে নাচ-গান ও নাগাড়া বেজে ওঠে। বিরসা আবার তার নতুন ধর্মে সবাইকে দীক্ষিত করতে শুরু করে। বিরসার নতুন ধর্মে যারা যোগ দিয়েছিলেন তাদেরকে বিরসাইত বলা হল। বিরসাইতরা নানা রকম কাজের ভার পেল। শুরু হল বিদ্রোহের প্রস্তুতি। সভা হতে লাগল মুন্ডা এলাকার গ্রামে গ্রামে। তামাড় ও খুঁটির পর্বতমালা থেকে কিছু দূরে ডোম্বা বা সাইকোর বনে ঢাকা উপত্যকা ডোম্বারি এলাকায় বিরসা তার প্রধান ঘাঁটি বানিয়ে বিদ্রোহের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ১৮৯৮ সালের ফেব্রুয়ারি তারপর ১৮৯৯ সালের অক্টোবর বা নভেম্বরে ডোম্বারি পাহাড়ে বিরসাইতরা সভা করে। এই সভায় বিরসা ব্রিটিশ রাজের লাল নিশান দেখিয়ে মুন্ডাদের বলে-‘দিকুদের সঙ্গে যুদ্ধ হবে। এই নিশানের মতো লাল রক্ত বইবে মাটিতে।’
১৮৯৯ সালের ডিসেম্বরে সাহেবদের বড়দিন উৎসবের উপর বিরসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ২৪ ডিসেম্বর সিংভূম ও রাঁচির ৬টি থানায় বিরসাইতরা আক্রমণ করে। এই সময় থানা, মিশন, গির্জাতে আগুন জ্বলতে থাকে। বেশ কিছু ইংরেজ সাহেব, মিশনারীরা, চৌকিদাররা আহত-নিহত হয়। ব্রিটিশ সরকারের টনক নড়ে। রাঁচির ডেপুটি কমিশনার স্ট্রিটফিল্ড বিরসাকে ধরার জন্য পুলিশ নিয়ে আসে। কিন্তু বিরসাকে ধরা যায় না। ১৯০০ সালের ৬ জানুয়ারি বিদ্রোহীরা এক জার্মান জঙ্গল চৌকিদার ও তার চাকরকে হত্যা করে। তার আগেরদিন গয়া মুন্ডা নামক এক বিরসাইতের বাড়িতে ৫০-৬০জন বিরসাইত মিলিত হয়। খবর পেয়ে সেখানে রাঁচির খুঁটি থানার হেড কনস্টেবল তার দুই জন কনস্টেবল ও তিন চৌকিদারকে নিয়ে গয়া মুন্ডার বাড়িতে পৌঁছালে বিদ্রোহীরা দুই কনস্টেবল জয়রাম ও বুদুকে হত্যা করে, অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ঘটনার পর দুমকা ও রাঁচি থেকে পুলিশবাহিনী, ডোরানডা থেকে সেনাবাহিনী এনে সিংভূম ও রাঁচির কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার বিরসাকে ধরার জন্য সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। খবর পেয়ে সৈলরাকাব পাহাড়ে অভিযান চালায় ইংরেজ বাহিনী। চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় পাহাড়টিকে। স্ট্রিটফিল্ড বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য আহ্বান করেন, কিন্তু বিদ্রোহীরা তার এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। শুরু হয় এক অসম যুদ্ধ। একদিকে চলে ঝাঁকে ঝাঁকে বন্দুকের গুলি, অন্য দিকে মুন্ডাদের তীর। অবশেষে বাস্তবতা, আধুনিক অস্ত্র বন্দুকের কাছে তীর পেরে উঠে না। বিরসা তার সঙ্গীদের নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এই অসম যুদ্ধে অনেক মুন্ডা নারী- পুরুষ ও শিশুরা নিহত হলেও সেই সময় সরকারী হিসেব মতে ৪ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ১টি শিশু মারা গেছে বলে বলা হয়।
বিরসাকে ধরার জন্য ৫০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এদিকে বিরসা গোপনে গ্রামে গ্রামে সভা করতে থাকে। বিরসা রোগাতো নামক এক গ্রামে শেষ সভা করে। ১৯০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে বিরসা সেনত্রা জঙ্গলে ঘুমাচ্ছিলেন। বিশস্ত সাথী ডোনকা মুন্ডার স্ত্রী সালী ভগবানের (বিরসা) জন্য ভাত রাঁধছিলেন। জঙ্গলের মাথার উপর ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। মনমারু ও জারকাইল গ্রামের ৭ জন মানুষ ধোঁয়া দেখে সেখানে গিয়ে বিরসাকে অতর্কিতে ধরে ফেলে। বিশ্বাসঘাতকতা করে বিরসাকে ইংরেজদের হাতে তুলে দেওয়া হয। বিরসাকে বন্দী করা হয় এবং বিচার কাজ শুরু হয়। বিরসার সাথে সাথে ৫৮১ জন বিরসাইতেরও বিচার শুরু হয়। এর মধ্যে ৩ জনের ফাঁসি হয় এবং ৭৭ জনের দ্বীপান্তরসহ নানা মেয়াদে কারাদন্ড হয়। বিদ্রোহীদের রাঁচি জেলখানায় রাখা হয়েছিল শেকল দিয়ে বেঁধে। ১৯০০ সালের ৩০ মে, বিরসা জেলের খাবার খায় না, বিরসা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা হয বিরসার কলেরা হয়েছে। বিরসা বাঁচবে না। কিন্তু বিরসা আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। হঠাৎ করে ৮ জুন বিরসা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর ৯ জুন সকাল ৮ টার দিকে বিরসা রক্ত বমি করতে করতে জ্ঞান হারায়। প্রায় ৯ টার দিকে বিরসা মুন্ডার মৃত্যু হয়। বিরসা মুন্ডার মৃত্যুতে হাহাকার করে ওঠে অন্য মুন্ডারা। বিরসার মৃত্যুর কারণ হিসেবে কলেরা বলা হলেও বিরসার ময়না তদন্ত রিপোর্ট ও তাঁর মৃত্যুর পূর্ব লক্ষণের সাথে কলেরা রোগের মিল পাওয়া যায়নি। অনেক অভিজ্ঞ ডাক্তার মনে করেন বিরসাকে অর্সেনিক বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছিল।
এভাবেই উলগুলানের মহানায়ক বিরসার মৃত্যু হলেও আজ অবধি তিনি বিরসা ভগবান হয়ে বেঁচে আছেন। বিরসা দেখিয়ে গেছেন অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে বিদ্রোহ করতে হবে, জীবন দিতে হবে। তাঁর এই আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরনা হোক। তবে আজও যারা সেবার নামে, ধর্ম প্রচারের নামে জনসংখ্যায় কম আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে না দিয়ে পঙ্গু করার চেষ্টা করছে, আদিবাসী শেকড়কে কেটে ছিন্ন করার চেষ্টা করছে তাদের চিত্তশুদ্ধ হোক। যারা আদিবাসীদের উপর প্রতিনিয়ত অন্যায় অত্যাচার করছে, আদিবাসীদের ভূমি দখল করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে তাদেরও শুভবোধ হোক এবং প্রত্যেক আদিবাসী এক একজন বিরসা ভগবান হয়ে আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও অধিকার রক্ষার যুদ্ধে সামিল হোক। সবশেষে একটি প্রশ্ন রেখে শেষ করবো, আদিবাসীদের উপর অন্যায় অত্যাচারের যে অদৃশ্য শেকল পড়ানো আছে সেটি ছিন্ন করার বোধোদয় কবে আমাদের রাষ্ট্রের হবে?
লেখক:
মানিক সরেন
আদিবাসী সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী
ই-মেইল: [email protected]