অন্যান্যজাতীয়মতামত ও বিশ্লেষণসাক্ষাৎকার

ঢাকায় আজ থেকে দুইদিনব্যাপী জাতীয় নারী সন্মেলন শুরু

 

“আদিবাসী নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এগিয়ে আসুন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঢাকার আসাদগেট সংলগ্ন সিবিসিবি মিলনায়তনে আজ থেকে শুরু হল জাতীয় নারী সন্মেলন। আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক এবং কাপেং ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় এ সন্মেলন শুরু হয়েছে।

আজ সকাল ১০ টা বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম উদ্বোধনী অধিবেশনের অতিথিবৃন্দদের নিয়ে মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে সন্মেলনের শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন।

আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক মিনু ম্রং এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) , চেয়ারম্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও  সভাপতি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম। রানী য়েন য়েন, চাকমা রানী, চাকমা সার্কেল; তপতী সাহা, প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর, ইকোনমিক সিকিউরিটি এন্ড রাইটস, ইউএন ওমেন; ওয়াসিউর রহমান তন্ময়, প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন; বাসন্তী মুর্মু, আদিবাসী নারী পরিষদ ও যুগ্ন আহ্বায়ক,  আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, চৈতালী ত্রিপুরা, যুগ্ন আহ্বায়ক, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক ও ভাইস চেয়ারপার্সন, কাপেং ফাউন্ডেশন। সঞ্চালনা করেন আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বলেন “বাংলাদেশ রাষ্ট্র এদেশের আদিবাসীদের বাঙ্গালী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। যার মধ্য দিয়ে এ দেশ যে বহু জাতিগোষ্ঠীর দেশ সেটি অস্বীকার এবং আদিবাসীদের আত্মপরিচয়কে নস্যাৎ করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহন থাকলেও রাষ্ট্র এখনো নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি বলে তিনি মন্তব্য জানান। এজন্য তিনি আদিবাসী নারীসহ সকল নারীকে একাত্ম হয়ে তাদের অধিকার আন্দোলনকে আরোও জোরদার করার আহবান জানান। পুরুষদেরও নারীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো সহ নারী অধিকার আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহবান জানান।তিনি আরোও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী নারীদের অধিকার বাস্তবায়নের জন্যেও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই।

সন্মেলনের উদ্বোধক আয়েশা খানম বলেন, বাংলাদেশের নারী আন্দোলন ও নারী অধিকার কখনই পুর্নতা পাবেনা যতক্ষন পর্যন্ত আদিবাসী নারীদের সম্পৃক্তটা থাকবেনা ও তাদের অধিকার আদায় হবেনা। তিনি বাজেটে আদিবাসী নারীদের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব জানান। তিনি আরোও বলেন, আদিবাসী নারীদেরকে রাস্ট্র ব্যাবস্থার সাথে যেমন যুদ্ধ করতে হয় তেমনি সমাজের সাথেও তেমনি যুদ্ধ করতে হয়।

রানী য়েন য়েন বলেন, আদিবাসী নারীরা দুইভাবে নির্যাতিত। একটি হচ্ছে তারা জাতিগত নিপীড়নের শিকার দ্বিতীয়টি তারা নারী হিসেবে অন্য নারীদের তুলনায় বেশি নির্যাতিত।

তপতী সাহা বলেন,  জাতিসংঘ নারীদের জন্য বিশেষ করে আদিবাসী নারীদের অধিকারের জন্য সর্বদা সচেষ্ট। তিনি মানবধিকার সংগঠনগুলোকে আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর পাশে গিয়ে দাড়ানোর আহবান জানান।

সন্মেলনে পাহাড়, সমতল এবং ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রায় দুই শতাধিক আদিবাসী নারী যোগ দেন। আগামীকাল আদিবাসী নারীদের অধিকারের ঘোষোনাপত্র পাঠের মধ্য দিয়ে সন্মেলনের সমাপ্তি হবে।

 

Back to top button