অস্ট্রেলিয়া এ্যাওয়ার্ড-২০১৮ পেল ২জন আদিবাসী
সোহেল হাজংঃ আগামী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ৭০জন বাংলাদেশী স্কলার অস্ট্রেলিয়া এ্যাওয়ার্ড নিয়ে উচ্চ শিক্ষালাভে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন। সেই ৭০জন এবং ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া এ্যাওয়ার্ড নিয়ে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা সম্পন্ন করে ফেরত আসা স্কলারদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশন গত ১১ ডিসেম্বর ঢাকায়, কমিশনের রিক্রিয়েশন সেন্টারে একটি বিশেষ বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে । এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনার এইচ.ই. জুলিয়া নিবলেট।
এবারের ৭০ জন স্কলারদের মধ্যে অধিকাংশই সরকারী কর্মকর্তা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বা চাকুরীজীবি। বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাঝে মাত্র দু’জন রয়েছেন দু’টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী থেকে । এই প্রথম এতো কম সংখ্যক আদিবাসী প্রার্থী এ বৃত্তি লাভে চূড়ান্ত হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া এ্যাওয়ার্ড-এ বাংলাদেশ থেকে মোট প্রার্থীর সংখ্যা যেখানে বাড়ছে সেখানে আদিবাসীদের সংখ্যা আকস্মিকভাবে এতো কমে যাওয়ায় বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন। অনেকেই এর মূল কারণ হিসেবে দেখছেন এবার অস্ট্রেলিয়া এ্যাওয়ার্ড-এর আবেদনের বিজ্ঞাপনে “এথনিক মাইনোরিটি কোটা” না থাকায় আদিবাসী প্রার্থীরা গুরুত্ব সেভাবে পায়নি। আবার বেসরকারি উন্নয়নকর্মীদের জন্য স্টাডি ফিল্ড সীমিত করে দেওয়াও আরেকটি কারণ হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। জানা যায়, এবার বাছাই পর্বে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন ছয়জন আদিবাসী প্রার্থী কিন্তু ফলাফলে চূড়ান্ত হয়েছেন মাত্র দু’জন। একটি ফেসবুক স্টেটাসে সাবেক বৃত্তিপ্রাপ্ত স্কলার জুঁই চাকমা লিখেছেন “আমি যদিও জানিনা, ঠিক কি কারনে এইবারের রেজাল্টে এই Negative Impact টা পড়েছে। কিন্তু এই ধরনের impact আমাদের সমগ্র আদিবাসীদের জন্য আশংকাজনক এবং হতাশাজনক, বিশেষ করে যে ৪-জন আদিবাসী স্টুডেন্ট এইবার ভুক্তভোগী হয়েছেন তাদের জন্য আমার সমবেদনা। তারা এত কষ্ট করে IELTS score 7 তুলেও এবং ভাল পরীক্ষা দেয়ার পরও বাকী ৭০-জন (Bangali) selected scholar দের সাথে এইবছর scholarship avail করতে পারল না।” তবে এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়া এ্যাওয়ার্ড পাওয়া আদিবাসী সাবেক এলামনাইগণ অনুভব করেন অস্ট্রেলিয়া সরকার ও অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের সাথে জরুরি আলোচনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। Australia Alumni Association Bangladesh-এর সমাজকল্যাণ ও নেটওয়ার্কিং সম্পাদক বিপাশা চাকমা বলেন আদিবাসী শিক্ষার্থীরা যাতে আরো বেশি এ এ্যাওয়ার্ড-এর সাথে যুক্ত হতে পারে এ ব্যাপারে কাজ করার জন্য আমাদের নেটওয়ার্ক Adivasi AusAID Scholars Bangladesh-কেও আরো কার্যকর ও শক্তিশালী করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, অস্ট্রেলিয়ান সরকারের ডিএফএটি (http://dfat.gov.au/about-us/publications/Pages/bangladesh-information-for-intake.aspx) ওয়েবসাইটে এখন ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়া এ্যাওয়ার্ড লাভে বাংলাদেশী প্রার্থীদের জন্য আবেদনের বিজ্ঞাপন দেয়া আছে। বৃত্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ইচ্ছুক প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে ৩০ এপ্রিল ২০১৮ এই সময়ের মধ্যে। এ বিজ্ঞাপনেও নারী, প্রতিবন্ধী ও এথনিক মাইনোরিটি-ব্যক্তিদের জন্য আবেদনে উৎসাহিত করার কথা লেখা আছে কিন্তু যে চারটি ফোকাস গ্রুপ রাখা হয়েছে তার মধ্যে আদিবাসী বা এথনিক মাইনোরিটি-দের জন্য নির্দিষ্ট কোন গ্রুপে উল্লেখ করা হয়নি বলে তারা আবারো অবহেলিত হওয়ার আশংকা থেকেই যাচ্ছে।