না ফেরার দেশে মহিউদ্দিন চৌধুরী
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী মারা গেছেন।
চট্টগ্রাম নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে তার বড় ছেলে আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জানান।
৭৪ বছরের জীবনে মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন ১৬ বছর। একাত্তরের এই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যু পর্যন্ত ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি।
হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত মহিউদ্দিনকে গতমাসে সিঙ্গাপুরে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। অবস্থার একটু উন্নতি হলে ঢাকা থেকে নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামে। কিন্তু সেই উন্নতি স্থায়ী হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য মেহেদীবাগের ম্যাক্স হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় বলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী জানান।
নওফেল ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর রাত ৩টার পর তার বাবার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানানো হয়।
সকালে মহিউদ্দিনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর ষোলশহর এলাকায় তার চশমা হিলের বাসায়।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, শুক্রবার আসরের পর বন্দরনগরীর লালদীঘি মাঠে তাদের প্রয়াত নেতার জানাজা হবে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে হোসেন আহমেদ চৌধুরী ও বেদুরা বেগমের ঘরে জন্ম নেন মহিউদ্দিন।
ছাত্র জীবনেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া মহিউদ্দিন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য; মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন, যুদ্ধের পর জড়িয়ে পড়েন শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে।
পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট জাতির জনককে হত্যার পর প্রতিশোধ নিতে পালিয়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। এরপর ১৯৭৮ সালে দেশে ফেরেন বলে আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মহিউদ্দিন চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের শীর্ষ পদে ছিলেন। চট্টগ্রামে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, বন্দর রক্ষা আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
১৯৯১ সালে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে পরাজিত হলেও ১৯৯৪ সাল থেকে টানা তিনবার চট্টগ্রাম সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়ে ১৬ বছর দায়িত্ব পালন করেন মহিউদ্দিন।