অন্যান্য

রংপুরে আগ্নিসংযোগ ও ভাঙ্গচুর ঘটনায় ঐক্য ন্যাপ ও ওয়ার্কার্স পার্টির নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ঐক্য ন্যাপ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি পৃথক দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বিবৃতিতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ী ঘরে পরিকল্পিতভাবে আগ্নিসংযোগ ও ভাঙ্গচুর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন “ফেসবুকে” কথিত পোস্ট দেয়ার নাম করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর এই আক্রমণ সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরির চক্রান্ত। ইতোপূর্বেও কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংস, নাসির নগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ী ঘরে তান্ডব চালানো সহ বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলা চালানোর জন্য পরিকল্পিতবাবে “ফেসবুক গল্প” সৃষ্টি করা হয়েছে। বিবৃতিতে তারা বলেন, অতীতেও এই ধরনের হামলার সাথে যুক্ত মূল হোতাদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এসকল ঘটনার কোন সুরাহা হয়নি। রংপুরের সলেয়াস বাজারের ব্রাহ্মণ পাড়া হিন্দুদের বাড়ী-ঘরে আক্রমণ ও জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনাটিও একই ষড়যন্ত্রের কেন্দ্র থেকে উৎসারিত। এই ঘটনায় জামাত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সামনে এসেছে। দেশে একটি সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরি করে রাজনৈতিক সুবিধা অর্জন করতে যারা তৎপর তারাই এই ঘটনার সাথে জড়িত।
বিবৃতিতে তারা, হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘর-বাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা ও অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান ও এলাকায় সৃষ্ট ভয়ার্ত অবস্থা দূর করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনে সহায়তাদানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আসাদুল্লাহ তারেক বিবৃতিতে বলেন, ফেসবুকে ব্যঙ্গ চিত্র পোষ্ট করার অভিযোগে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩০টি অধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও বর্বরোচিত নিপীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ তীব্র নিন্দা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জীবনের নিরাপত্তা, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ঘর-বাড়ী পূর্ন:নির্মাণ ও ঘটনায় জড়িত উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, একজন পোশাক শ্রমিক ফেসবুকে ব্যঙ্গচিত্র পোষ্ট করাকে ঘিরে থানায় জিডি করা হয়েছে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উম্মাদনা ছড়িয়ে গতকাল সংগঠিত ও পরিকল্পিত ভাবে সংখ্যালঘুদের বাড়ী-ঘরে হামলার ঘটনা ঘটালো। থানায় জিডি করার পর কি করে একই ঘটনায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করা হলো, তা হলে বিষয়টা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে সন্ত্রাসবাদীরা পূর্বেপরিকল্পিত পরিকল্পনা মোতাবেক দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরী করার নির্মিত্তে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, নিপীড়ন চালিয়েছেন একই সাথে প্রশাসনের উদাসীনতায় পরবর্তীতে ৩০টি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট নারী পুরুষ শিশু নিপীড়নের স্বীকার হয়ে মানবিক বিপর্যয়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রশাসনের পরবর্তী প্রতিরোধের চেষ্টায় ১ জন নিহত ও পুলিশ সহ অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনা কোন অবস্থাই পুলিশ প্রশাসন তাদের ব্যর্থতার দায়িত্ব এড়াতে পারেনি। এই জঘন্য ঘটনা এড়ানোর জন্য কেন-প্রশাসনের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না তা খুজে বের করা দরকার। আমরা এই ঘটনা দেশের স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র বলেই মনে করছি। সংগঠিত ঘটনার যেন পূর্নরাবৃত্তি দেশের কোথাও না ঘটে এই বিষয়ে দেশব্যাপী সতর্কতা অবলম্বন, সংখ্যালঘু আদিবাসীসহ সমাজের সকল মানুষের জীবন-জীবীকা, সম্পদের নিরাপত্তা বিধানের কার্যকর পদক্ষেপের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

Back to top button