আন্তর্জাতিক

স্বাধীনতার পক্ষে কাতালোনিয়ার পার্লামেন্ট

স্পেন থেকে স্বাধীন হওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে দেশটির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্ট। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে ৭০ জন স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট পড়েছে ১০টি। দুটি ব্যালট ফাঁকা ছিল। তবে বিরোধী দলের এমপিরা ভোটাভুটিতে অংশ নেননি। ভোটাভুটির আগে আগে তারা পার্লামেন্ট থেকে ওয়াক আউট করেন।
কাতালোনিয়ার পার্লামেন্টে যে প্রস্তাবটির প্রশ্নে ভোটাভুটি হয়েছে সেখানে লেখা ছিল: ‘আমরা কাতালোনিয়া প্রজাতন্ত্রকে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, আইনের শাসনে পরিচালিত গণতান্ত্রিক ও সামাজিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলব।’

প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর বার্সেলোনায় পার্লামেন্টের বাইরে জড়ো হওয়া স্বাধীনতাপন্থীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। তবে ভিন্ন পরিস্থিতি দেখা গেছে মাদ্রিদে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্প্যানিশ সরকার যখন কাতালোনিয়ার ওপর সরাসরি কেন্দ্রীয় শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে তখনই আঞ্চলিক পার্লামেন্ট এ রায় দিলো। শুক্রবার স্প্যানিশ সিনেটে বক্তব্য দিতে গিয়ে কাতালোনিয়ায় সরাসরি কেন্দ্রীয় শাসন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সিনেটরদের প্রতি আহ্বান জানান স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয়। কেবল তাই নয়, কাতালোনিয়ার নেতা কার্লেস পুজদেমন, তার ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং কাতালোনিয়ার সকল আঞ্চলিক মন্ত্রীদেরকে অপসারিত করতে চান বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, স্প্যানিশ সংবিধানের ১৫৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংকটকালীন সময়ে একটি অঞ্চলকে পরিচালনা করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা সরকারের রয়েছে। তবে এই ১৫৫ ধারা প্রয়োগ করা হবে কিনা সেই প্রশ্নে এখনও স্পেনের সিনেটে ভোটাভুটি হয়নি। সিনেটরদের ১৫৫ ধারা প্রয়োগের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্যই আহ্বান জানিয়েছেন রাজয়।
রাজয়ের মতে, কাতালোনিয়ায় ‘আইনের শাসন,গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা’ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন এবং এর কোনও বিকল্প নেই। তার অভিযোগ, কাতালোনিয়ার সরকার পরিবারগুলোকে এবং সমাজকে বিভক্ত করছে। এর মধ্য দিয়ে কাতালোনিয়ার রাজস্ব,পুলিশ ও সরকারি মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে মাদ্রিদ সরকার।

উল্লেখ্য,স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতার জন্য ১ অক্টোবর গণভোট আয়োজন করে কাতালোনিয়া। গণভোটে ৯০ শতাংশ মানুষ কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চলতি সপ্তাহে কাতালোনিয়ারা নেতাদের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে পুজদেমন সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে সরে এসে আলোচনার আহ্বান জানান। তবে,স্বাধীনতাকামীদের এ গণভোটকে স্পেনের সরকার বেআইনি ঘোষণা করে।
তথ্যসূত্রঃ রয়টার্স ও বিবিসি

Back to top button