নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান, যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি উ. কোরিয়ার
জাতিসংঘের আরোপ করা নতুন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা মানবে না জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে শিগগিরই ‘কল্পনাতীত কষ্ট’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
জেনেভায় জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এক সম্মেলনে মঙ্গলবার পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রদূত হান তায়ে সং বলেন, “উন্নতির প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হওয়া উত্তর কোরিয়ার পরমাণু উন্নয়ন কার্যক্রমের লাগাম টেনে ধরার আদিম খেলায় মত্ত যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সংঘাতের কারণে ধ্বংস হবে।”
গত ৩ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ ও সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর জেরে দেশটি ফের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সোমবারের নিষেধাজ্ঞায় উত্তর কোরিয়ার বস্ত্র রপ্তানি ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এদিন নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্যের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে দেশটির ওপর এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এ নিয়ে ২০০৬ সাল থেকে দেশটির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ নবম বারের মতো সর্বসম্মতভাবে উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল।
যদিও দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাবটি আরও অনেক কঠোর ছিল, কিন্তু উত্তর কোরিয়ার মিত্র ও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী দুই সদস্য চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আদায়ের জন্য প্রস্তাবটি অনেকটা নমনীয় করা হয়।
২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়ার প্রধান রপ্তানি দ্রব্য কয়লা ও অন্যান্য খনিজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল নিরাপত্তা পরিষদ। এবার দেশটির দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানি পণ্য বস্ত্রের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল।
এশিয়ায় যু্ক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশগুলো উত্তর কোরিয়ার উপর জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছে।
জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, যদি পিয়ংইয়ং তাদের পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রের বেপরোয়া উন্নয়ন কাজ থেকে সরে না আসে তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় তারা উত্তর কোরিয়ার ওপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করতে প্রস্তুত।
দক্ষিণ কোরিয়ার ব্লু হাউজের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক শান্তির বিরুদ্ধে বেপরোয়া মনোভাব শুধুমাত্র চরম থেকে চরমতর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাই নিয়ে আসবে, বিষয়টি উত্তর কোরিয়ার বোঝা প্রয়োজন।”
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, “নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তের পর উচ্চ পর্যায়ের চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার কৌশলে পরিবর্তন আনতে হবে।”