আঞ্চলিক সংবাদ

আজ রাঙ্গামাটিতে পর্দা উঠছে আর এস দেওয়ান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের

আজ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর ড. রামেন্দু শেখর দেওয়ান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট। বিকাল ৩টায় রাঙামাটির রাঙ্গাপানির কান্ত চাকমা স্মৃতি খেলার মাঠে মাস ব্যাপী তৃতীয় বারের মতো এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটি আইপিনিউজকে জানান, ড. রামেন্দু শেখর দেওয়ান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান থেকে অংশ নিচ্ছে হাট ২৪টি দল।

রাঙ্গাপানির কান্ত চাকমা স্মৃতি খেলার মাঠে মাস ব্যাপী তৃতীয় বারের মতো আয়োজিত এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করবেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার রাজা বাশীষ রায়। উপস্থিত থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)।আজকের উদ্ধোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে খাগড়াছড়ি আদিবাসী ফুটবল টিম বনাম বরকল একাদশ।

আর এস দেওয়ান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ আয়োজক কমিটি’র আহ্বায়ক জুয়েল চাকমা আইপিনিউজকে বলেন, আমরা জুম্ম জনগণের জন্য রামেন্দু শেখর দেওয়ানের যে অবদান সেগুলোকে সম্মান জানিয়ে এই ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করছি। আমরা জানি, যে সমাজে গুনীর কদর নেই সে সমাজে গুনী মানুষের জন্ম হয় না। তাই আমরা চাই আমাদের সমাজে আরো রামেন্দু শেখর দেওয়ানের জন্ম হোক এবং জুম্ম সমাজের অধিকারের জন্য লড়াই করুক। মূলত ক্রিড়ার মাধ্যমে তরুণ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং জুম্ম সমাজের মধ্যে রামেন্দু শেখর দেওয়ানের অবদানকে তুলে ধরাই আমাদের এই টুর্নামেন্ট এর মূল কাজ। এই টুর্নামেন্ট সফল করতে আমি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।

ড.রামেন্দু শেখর দেওয়ান (আরএস দেওয়ান) ১৯৩২ সালের ৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির সদরের খবংপড়িয়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার গতার নাম চন্দ্র দেওয়ান ও মাতার নাম চন্দ্রমূখী দেওয়ান। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন যষ্ঠ।

তিনি বর্তমান খবংপড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় পর্যন্ত পড়া লেখা করেন। এরপর রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার মহাপুরম মিডল ইংলিশ স্কুলে ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। এরপর তিনি রাঙামাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে বিজ্ঞান শাখায় সেন্টার প্রথম হয়ে ১৯৫২ সালে প্রথম ।ভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এর পর তিনি চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন এবং প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সাথে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। ঢাকা থেকে তিনি ১৯৬১ সালে বিএ অনার্স (রসায়ন) ও ১৯৬৩ সালে এমএসসি (রসায়ন) সম্পন্ন করেন। পরে তিনি পিএইচডি ডিগ্রির জন্য ১৯৬৭ সালে যুক্তরাজ্যে (ইংল্যান্ড) এ চলে এন এবং সেলফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের নিজ অ্যাপার্টমেন্টে ৮৯ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরন করেন। ১নি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আন্তর্জাতিক বিষয়ে মুখপাত্র ছিলেন। তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে ও মানবাধিকার সংগঠনের কাছে পার্বত্য ট্টগ্রামে নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি পাহাড়িদের অধিকারের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলতে অনন্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি পার্বত্য ট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীন দেশের জাতীয় সংসদের প্রথম সংসদ সদস্য প্রয়াত মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এমএন লারমা) এবং জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যেতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার (সন্তু লারমা) আপন মামা।

Back to top button