
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও অপহৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যয়নরত ১৮৩ আদিবাসী শিক্ষার্থী। আজ বৃহষ্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা এই দাবী জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৬ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সকাল আনুমানিক ৬:৩০ ঘটিকায় খাগড়াছড়ি সদরস্থ গিরিফুল জায়গা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হয়। অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিশন চাকমা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এ অপহরণ ঘটনার সাথে জড়িত। ইউপিডিএফ কর্তৃক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এমন অপহরণ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তীব্র নিন্দা এবং অপহৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভুবন চাকমা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আরো বলা হয়, অপহৃত শিক্ষার্থীরা বিঝু উৎসব উপলক্ষে বন্ধুদের সাথে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে যায়। বিঝু শেষে গত ১৫ এপ্রিল তারা চট্টগ্রামে ফেরার উদ্দেশ্যে বাঘাইছড়ি থেকে দিঘীনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে চলে আসে। সেখানে গতকাল চট্টগ্রামগামী বাসের টিকিট না পাওয়ার কারণে তারা পাঁচজনে খাগড়াছড়ি শহর থেকে কিছু দূরে কুকিছড়া নামক জায়গায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রি যাপন করে। গত ১৬ এপ্রিল সকালে কুকিছড়া থেকে টমটম গাড়ি যোগে খাগড়াছড়ি সদরে আসার পথে গিরিফুল নামক এক জায়গায় তাদের গাড়ি আটকানো হয় এবং টমটম গাড়ির ড্রাইভারসহ ৫ জন শিক্ষার্থীকে গিরিফুল নামক জায়গা থেকে এক অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে টমটম ড্রাইভারকে ছেড়ে দিলেও পাঁচজন শিক্ষার্থীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন অপহরণ ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সারা বাংলাদেশে মানবাধিকার বিরোধী ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষার পরিপন্থী উল্লে করে বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের ওপর এমন ঘৃণ্য ঘটনা আমাদের জন্য আত্মবিধ্বংসী কাজ। তাই আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অপহৃত ৫ জন শিক্ষার্থীকে অতিদ্রুত নিঃশর্তভাবে সুস্থ শরীরে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি এবং এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য যথাযথ প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।
উক্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়(চুয়েট), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বান্দরবান সরকারি কলেজ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউরোপীয়ান ইউনির্ভাসিটি, পিপলস ইউনির্ভাসিটি, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা কলেজ, পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থী।