মধুপুরে বনবিভাগ ও স্থানীয় আদিবাসীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
আজ সোমবার সকালে মধুপুরের দোখলার চুনিয়া কটেজে স্থানীয় আদিবাসীদের সাথে এক মতবিনিময় সভা করেছে বনবিভাগ ও বিভিন্ন সংগঠন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ ও জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কর্তৃক মাননীয় হাইকোর্টে বিভাগে জনস্বার্থে করা রিট পিটিশন (নং ১৮৩৪/২০১০) এর ধারাবাহিকতায় ২৮/০৮/২০১৯ তারিখে মাননীয় হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৬/০৫/২০২৪ খ্রি. তারিখে গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির কার্যপরিধি অনুসারে আজকের মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত মতবিনিমিয় সভার উদ্দেশ্য ও গৃহীত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক আইপিনিউজকে জানান, “হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি মধুপুরের আদিবাসীদের ভূমি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করবে। তাতে আদিবাসীদের পক্ষ থেকে সেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হবে। এই জরিপ আগামী ২০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আজকের সভাটি মূলত জরিপ পূর্ববর্তী মতবিনিময় সভা। আমাদের মধুপুরে ৫০টি আদিবাসী গ্রাম। আমরা কিছুদিনের মধ্যেই জরিপ প্রস্তুতি হিসেবে এলাকাভিত্তিক অবহিতকরণ সভা করবো। আমরা চাই আমাদের আদিবাসীদের ভূমি সমস্যার স্থায়ী সমাধান হোক। ”
সভায় সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সহ সভাপতি অজয় এ মৃ, কারিতসের প্রতিনিধি ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির সদস্য বাঁধন চিরান, স্থানীয় আদিবাসী নেতা মিহির মার্টিন মৃ, সাবেক শিক্ষক প্রনাথ মৃ, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সহ সভাপতি টনি চিরান, গারো স্টুডেন্ট ফেডারেশন জিএসএফ কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি প্রলয় নকরেক, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) থেকে পবিত্র সিমসাং সহ মধুপুরের বিভিন্ন আদিবাসী গ্রাম থেকে শতাধিক আদিবাসী প্রতিনিধি।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রতিনিধি এবং উদ্যানের রেঞ্জার।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ কিংবা পাকিস্তান শাসনামল পেরিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছরেও মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসীদের ভূমির মালিকানা ও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি।
স্থানীয় আদিবাসীদের দাবি, “ বিভিন্ন সরকারের সময় জাতীয় উদ্যান, ইকোপার্ক, ইকো-ট্যুরিজম, ফায়ারিং রেঞ্জ ও সংরক্ষিত বনভূমি ঘোষণার নামে আদিবাসীদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদের নীল নকশা করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় সরকারের বনবিভাগ অপরিকল্পিত, পরিবেশ আগ্রাসী ও বন বিনাশী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে”।
মধুপুরের আদিবাসীদের ভূমির স্থায়ী সমাধানের লক্ষে ২০১০ সালে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করা হয়। সেই রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে মাননীয় হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দেয়। সেই নির্দেশনা অনুসারে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে আদিবাসীদের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠা করার প্রক্রিয়ার একটি ধাপ হিসেবে জরিপটি পরিচালনা করা হচ্ছে।