সম্প্রতি পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক হামলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিবেদন প্রকাশ
আইপিনিউজ ডেস্ক: গত ১৮, ১৯ এবং ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইং তারিখে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির দিঘীনালা এবং রাঙ্গামাটিতে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। সংগঠনটির সহ তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, সজীব চাকমার স্বাক্ষরিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে এ ধরণের সাম্প্রদায়িক হামলা নতুন কিছু নয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর আজ অবধি বিশেষ মহলের পৃষ্টপোষকতায় ২১ টি সাম্প্রদায়িক হামলা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এসকল সাম্প্রদায়িক হামলার মূল উদ্দেশ্য হলো, অমুসলিম অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করা এবং সে লক্ষ্যে তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি তাদের চিরায়ত ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে জবরদখল করা।
প্রতিবেদনে ঘটনা পরবর্তী সময়ে আইএসপিআরের দেওয়া বিবৃতিতে ঘটনার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নাম জড়ানোকে দায় চাপিয়ে দেওয়ার হীন চেষ্টা বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদও আইএসপিআর এর বক্তব্যকে সাম্প্রদায়িক, দায়িত্বহীন, একপেশে ও উস্কানিমূলক বলে বিবৃতি দেয়। প্রকৃতপক্ষে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাথে রাঙ্গামাটিতে আয়োজিত সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির সাথে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কোন সম্পৃক্ততা নেই বলেও উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলায় ৪ জন আদিবাসী নিহত হয় এবং আহত হয় প্রায় ১০১ জন। এছাড়াও ঘরবাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, রাঙ্গামাটিতে ২৪ টি, খাগড়াছড়ির দিঘীনালায় ৫২ টি এবং বাইক ও অটোরিক্সা ২৪ টি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের জন্য ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করা হয়েছিলো। সে চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সমস্যার সমাধান হবে। এবং সে লক্ষ্যে, সমগ্র জুম্ম সমাজকে চুক্তি বাস্তবায়নের বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
প্রতিবেদনে ৪ টি সুপারিশমালা দেওয়া হয়:
১। ১৯-২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা ও রাঙ্গামাটিতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
২। নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারের তরফ থেকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা প্রদান করা।
৩। খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা, রাঙ্গামাটি সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা।
বিস্তারিত জানতে দেখুন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিবেদন- https://www.pcjss.org/report-on-communal-attacks-in-khagrachari-dighinala-and-rangamati-on-18-19-and-20-september-2024/