কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধিঃ বাঁধ রক্ষায় ১৬টি স্পিলওয়ে খুলে দিয়েছে জলবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ
পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাঁধ রক্ষা করতে এর ১৬টি স্পিলওয়ে তিন ফুট করে খুলে দিয়েছে কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। এতে স্পিলওয়েগুলো দিয়ে সেকেন্ডে ৫৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় স্পিলওয়েগুলোর পরিধি বাড়িয়ে তিন ফুট করে খুলে দেওয়া হয়।
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, স্পিলওয়ে দিয়ে সর্বোচ্চ পরিমাণে পানি ছাড়া হচ্ছে। পাশাপাশি কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারটি ইউনিট চালু রেখে টারবাইনের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে আরও ২৪ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে সর্বোচ্চ ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ১৬টি স্পিলওয়ে ও চারটি টারবাইনের মাধ্যমে একসঙ্গে সেকেন্ডে ৮২ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাভাবিক নিয়মে এসময় কাপ্তাই হ্রদে ৯২ দশমিক ৫২ এমএসএল (মিনস সি লেভেল) পানি থাকার কথা। কিন্তু গতকাল (সোমবার) রাত ১০টা পর্যন্ত পানি ছিল ১০৭ দশমিক ৬৭ এমএসএল। কাপ্তাই বাঁধের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে হ্রদে ১৫ দশমিক ১৫ ফুট পানি বেশি রয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে উজান থেকে ধেয়ে আসছে পাহাড়ি ঢল। তাই বাড়তি পানির চাপ সামলাতে ১৬টি গেট একসঙ্গে খুলে দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট একসঙ্গে চালু থাকলে এত পানি ছাড়ার প্রয়োজন হতো না। তখন ইউনিটের জেনারেটরের মাধ্যমে পানি ছাড়া হতো সেকেন্ডে ৩৪ হাজার কিউসেক। একটি ইউনিট নষ্ট থাকায় এখন চালু আছে চারটি।
কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিনে হ্রদে প্রায় সাড়ে তিন ফুট পানি বেড়েছে। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে হ্রদের পানির স্তর বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো.আবদুর রহমান জানান, গত শনিবার সকালে হ্রদে পানি ছিল ১০৫ দশমিক ৪ এমএসএল। বিকালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৭ দশমিক ৬৭ এমএসএলে। সোমবার বিকাল পর্যন্ত হ্রদে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় সাড়ে ১৫ ফুট পানি বেশি ছিল। ২৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারটি ইউনিটে গড়ে সর্বোচ্চ ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে গেলেও উজান থেকে আসা পানির চাপ কমানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে স্পিলওয়ে দিয়ে পানি ছাড়ার প্রয়োজন হয়। অবস্থার উন্নতি না হলে পানি ছাড়ার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি।