সীতাকুণ্ডে হামে আক্রান্ত ১০ আদিবাসী শিশু হাসপাতালে
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাছড়ি ত্রিপুরা পাড়ায় হামে আক্রান্ত আরও ১০ আদিবাসী শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত ২৮ জুলাই সকালে ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রফিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ (বিআইটিআইডি)-এ তাদের ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘হামে আক্রান্ত হয়েছে এমন আশঙ্কা থেকে ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দারা ১০ আদিবাসী শিশুকে বিআইটিআইডি হাসপাতালে নিয়ে আসেন।। ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনজনের হামে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন এবং তাদেরকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য পাঠিয়ে দেন। অন্য শিশুদেরও ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত হামে আক্রান্ত হয়ে ত্রিপুরা পাড়ার ১২৬ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১০৬ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরে গেছে। একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ১৯ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’
এদিকে হাম প্রতিরোধে ওই পাড়াসহ সীতাকুণ্ডের তিনটি ইউনিয়নে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে প্রশাসন। তিন সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচির আওতায় ওই তিন ইউনিয়নের ছয় মাস থেকে পনের বছর বয়সী ৪৬ হাজার ১৪৫ জনকে টিকা প্রদান করা হবে।
সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘হামে আক্রান্তের ঘটনায় শনিবার থেকে সীতাকুণ্ডের তিনটি ইউনিয়নে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতায় তিনটি ইউনিয়নের ৮২টি স্কুলের শিশু শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সর্বমোট ৩১ হাজার ২২৫ ছাত্র-ছাত্রীকে টিকা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি এসব ইউনিয়নের ত্রিপুরা পাড়ার ১৪ হাজার ৯২০ শিশুকেও টিকা প্রদান বরা হবে।’
উল্লেখ্য, ফোসকা, কাশি, পাতলা পায়খানাসহ অন্যান্য উপসর্গে আক্রান্ত হয়ে গত ৮ থেকে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে ত্রিপুরা পাড়ার নয় শিশু মারা যায়। নিহত শিশুদের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। প্রথমে রোগটিকে অজ্ঞাত হিসেবে ঘোষণা করেন সিভিল সার্জন। পরে আক্রান্ত শিশুদের রক্ত ও প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষা করে জানা যায়, তারা হামে আক্রান্ত হয়েছিল। ত্রিপুরা পাড়ায় টিকাদান কর্মসূচি না থাকার পাশাপাশি তীব্র অপুষ্টির কারণেই রোগটি মহামারী হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার কারণে ছয় স্বাস্থ্য মাঠকর্মীকে বদলি করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পরে ২৪ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়।