২৫ নভেম্বর সারা দেশে জঙ্গিবাদ বিরোধী দিবস পালনের আহ্বান:
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): ২৫ নভেম্বর সকাল ১০ টায় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের এক আলোচনা সভায় বক্তারা ২৫ নভেম্বর সারা দেশে জঙ্গিবাদ বিরোধী দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় শাহবাগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হারুনার রশিদ ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় রুম-১ জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্স, শাহবাগ ঢাকা-১০০০ অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম সবুজ, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক আব্দুস সোবাহান, আব্দুল ওয়াহেদ, মালিহা পারভিন, রেজাউল কবির, উম্মে জাহেদা ইতি প্রমুখ। সভায় ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট পারভেজ হাসেম, সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একে আজাদ।
সভায় সালেহ আহমেদ বলেন, মূলত দেশের পরিস্থিতির অবস্থার প্রেক্ষিতে স্বাধীনতার পর থেকে রাজনৈতিক দল সমূহের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে উগ্রবাদিরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে তাদের অবস্থান পাকাপক্ত করেছে। এরা মানবতা ও সভ্যতা পরিপন্থী পশ্চাপদ শক্তি। এই শক্তি নিমূল করতে হলে রাজনৈতিক দল সমূহের সাথে সরকার ও রাষ্ট্রের দুরত্ব কমানোর পাশাপাশি গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করতে হবে। উগ্রধর্মান্ধ রাজনীতি বন্ধ করতে জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জন মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে এমন কাজ থেকে রাষ্ট্র ও সরকারকে বিরত থাকতে হবে।
রাজিয়া সামাদ ডালিয়া বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিজ্ঞানমুখি ও আনন্দমুখর করে তোলা না গেলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে সমাজ সভ্যতার আলো জ¦ালানো সম্ভব হবে না। মূলত মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস চর্চা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্টায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা প্রতিষ্টা ও গণতন্ত্রের সংস্কৃতি কার্যকর করতে হবে।
অধ্যাপক আব্দুস সোবাহান বলেন, অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে বলতে চাই সমাজে অনিয়ম বৈষম্য, নিপীড়ন ও পশ্চাদপদতা মানুষকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় সময়গুলোতে রাজনৈতিক দল ও সরকারের বিভিন্ন স্তরে অসাধু ব্যক্তিদের হীরস্বার্থ রক্ষা ও লুন্ঠনের উপর দেশে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ প্রতিষ্টা লাভ করে। যদিও আজকে বৈশ্বিক সংকটের অন্যতম উপাদান জঙ্গিবাদ। এই অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমঝোতা দরকার। এই ক্ষেত্রে আমাদের সরকার কতোটা আন্তরিক তার প্রমান দিতে হবে। ধর্মান্ধ রাজনীতির পৃষ্টপষোকদের চিহ্নিত করতে হবে। অর্থনৈতিক বৈষম্য নিরসনের পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিজ্ঞান ও কর্মমূখি করতে হবে। আন্তমহাদেশীয় সহযোগীতার ভিত্তিতে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে হারুনার রশিদ ভুঁইয়া বলেন, সাম্প্রদায়িকতার সর্বশেষ পরিণতি হলো জঙ্গিবাদ দুভার্গ্যজনক হলেও সত্য আমাদের দেশে স্বাধীনতার পর থেকে যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছেন সব রাজনৈতিক দল ও সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তিসমুহকে কোন না কোন ভাবে কাছে টানার চেষ্টাসহ পৃষ্টপোষকতায় লিপ্ত ছিলেন। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দুর্বলতার সুযোগে এই অপশক্তি এখন ক্ষমতায় নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মূলতঃ এরা নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার সুযোগ নিয়ে বর্তমানে রাষ্ট্র ও সমাজকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। এই অপশক্তি সমুহের দেশ-বিদেশে শিকড় রয়েছে। এদের কঠোর হস্তে দমন করতে হলে উদার গণতান্ত্রিকমনা, রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য গড়তে হবে।
২৫ নভেম্বর, ২০২২ সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী দিবসের আহ্বান জানান এবং জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জাতীয় জাগরণ গড়ে তোলা, উগ্রবাদি রাজনীতি নিষিদ্ধ করা ও জনজীবনের সংকট নিরসনে গরীব মেহনতী মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবীও জানান।