আঞ্চলিক সংবাদ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি: আতঙ্কে স্থানীয়রা

আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে আবারও গোলাগুলি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ  বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করছে। এদিকে  টানা দুই দিন গোলাগুলির শব্দে সীমান্তের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে ।

তুমব্রু সীমান্ত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মাহামুদুল হক সাংবাদিকদের  বলেন, ‘সকাল থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আবারও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আজকের শব্দগুলো বিকট; মর্টার শেলের আওয়াজ মতো। তবে আকাশে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান উড়তে দেখা যায়নি।’

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘সীমান্তে দুই দিন গোলাগুলি বন্ধ থাকায় মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আবারও গোলাগুলি শুরু হওয়ায় ভয়ে আছে সীমান্তের লোকজন। আজও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আজকে মনে হচ্ছে মর্টার শেল ছোড়া হচ্ছে। শব্দগুলো বিকট। দিন দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এতে লোকজনের মাঝেও ভয়ভীতি বাড়ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস বলেন, ‘তুমব্রু সীমান্তে রাখাইনে সকাল থেকে আবারও গোলাগুলি চলছে বলে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের সীমান্ত বাহিনী কাজ করছে। সীমান্তের বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হতে বলা হচ্ছে।’

বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক জানান, সীমান্তে আজকেও গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। সীমান্তে বসবাসকারীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এর আগে ২৮ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা দুটি মর্টার শেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় বান্দরবানের ঘুমধুমের তমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। ঘটনার পরপরই সীমান্তে পুলিশের টহল ও নিরাপত্তা জোরদার করা হ‌য়ে‌ছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

মিয়ানমারে যা ঘটছে: 

মিয়ানমারে সামরিক শাসন শুরুর পর থেকে কড়া সেন্সরশিপ আরোপের ফলে দেশটির তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে যা জানা যাচ্ছে তা হল গত আগস্ট মা থেকে সেদেশের রাখাইন, তানপট্টি ও হাকা রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে আরাকানের বিদ্রোহী সশস্ত্র বাহিনীগুলোর মধ্যে লড়াই চলছে। এর মধ্যে এ লড়াই আরো তীব্রতর হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। এ পর্যন্ত দেশটির বেশ কিছু সেনা সদস্য ও অন্যান্য আইন রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মারা পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে গত মে মাস থেকে কায়াহ, কাইন ও চিন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বড় ধরণের সামরিক অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমার সেনা বাহিনী । এসব অভিযানে সেদেশের সেনাবাহিনী  হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

Back to top button