খাগড়াছড়িতে ৩০ জুন পর্যন্ত পূর্বানুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
খাগড়াছড়িতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির জন্য অস্ত্রবাজি ও চাঁদাবাজিকে দায়ী করে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত পূর্বানুমতি ছাড়া সকল ধরণের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিকে বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলার অভিযোগে আটক ৮ জনের মধ্যে আদালত ৫ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন।
জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. আলী আহমেদ খান, সদর জোন কমান্ডার জি এম সোহাগ, ৩২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল হাসানুজ্জামান চৌধুরী ও খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডারের প্রতিনিধি মেজর মাশফেকুর রহমানসহ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন, ডিজিএফআইয়ে সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম কাউছার হোসেন, জেলা পরিষদ সদস্য জাহেদুল আলম, পৌর সভার মেয়র মো. রফিকুল আলম, রবি শংকর তালুকদার, পরিবহন গ্রুপের নেতা এসএম শফি, সাংবাদিক এইচ এম প্রফুল্ল, জীতেন বড়ুয়া ও জসিম উদ্দিন মজুমদার।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধ ছাড়া এ অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, প্রতি বছর ঘটনা ঘটতে দেওয়া যাবে না। তিনি আইন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
সভায় ৩২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল হাসানুজ্জামান চৌধুরী অভিযোগ করেন, একটি মহল জোর করে স্বনির্ভর বাজার বন্ধ করে রেখেছে।
পুলিশ সুপার মো. আলী আহমেদ খান বলেন, পুলিশ সমান দৃষ্টিতে আইন প্রয়োগ করছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর ও উস্কানীমূলক প্রচারণা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলার আশ্বাস দেন।
মেয়র রফিকুল আলম বলেন, বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতা আব্দুল মজিদ, মাঈন উদ্দিন ও এসএম মাসুম রানার নেতৃত্বে যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, আমরা কি এদের হাতে বাঙালিদের ভাগ্য ছেড়ে দিয়েছি।
এদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে খাগড়াছড়ি ৩২ বিজিবির নায়েক সুবেদার আব্দুল হক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মো. আব্দুল হান্নান জানান, মামলায় ২৬জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০/৩০জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ইউপিডিএফ’র সংগঠক মিঠুন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদিকা দ্বিতীয়া চাকমার নাম রয়েছে বলেও জানা গেছে। আটককৃতদের ৮জনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া বেগমের আদালতে তোলা হলে আদালত ৫জনের জামিন মঞ্জুর করেন।