জাতীয়

পার্বত্য অঞ্চলের বনাঞ্চল পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছেঃ সন্তু লারমা

ফাইল ফটো
পার্বত্য অঞ্চলের বনাঞ্চল পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। যে এলাকার মানুষকে রক্ষা করার কোনো উদ্যোগ নেই, সেই এলাকায় কীভাবে বন ও প্রকৃতি রক্ষা করা হবে?
গতকাল বুধবার পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের সভাকক্ষে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা বলেন, প্রাকৃতিক বন নিয়ে পাহাড়িদের জীবন। প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে পাহাড়ের মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদ আইন কার্যকর না হওয়ায় পাহাড়ে অব্যাহতভাবে বন ধ্বংস হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

রাঙামাটির সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নের ডলুছড়ি এলাকার পার্বত্য গ্রামীণ বন এবং সেখানকার জীববৈচিত্র্য ও গাছপালা নিয়ে লেখা এই বইয়ের নাম বায়োডাইভারসিটি অব ডলুছড়ি ভিলেজ কমন ফরেস্ট ইন রাঙামাটি। উন্নয়ন সংস্থা হিল ফ্লাওয়ার ও অরণ্য ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে বইটি বের করা হয়েছে।

উন্নয়ন ও পর্যটনের নামে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা হয়েছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থা স্থানীয় জনগণের হাতে তুলে দিতে হবে। না হলে বন রক্ষা করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, বন হারিয়ে যাওয়ায় পাহাড়িরা এখন চরম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে রয়েছে। এর আগে কাপ্তাই বাঁধের কারণে অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসে।

গতকাল বেলা আড়াইটায় স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা হিল ফ্লাওয়ার ও অরণ্য ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হিল ফ্লাওয়ারের নির্বাহী পরিচালক নীলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা। বক্তব্য দেন অরণ্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তফা ফিরোজ, বন বিভাগের রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. রফিকুল হাসান, আঞ্চলিক পরিষদের সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম (সিএইচটি) হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন, উন্নয়ন সংস্থা টংগ্যার নির্বাহী পরিচালক বিপ্লব চাকমা, পার্বত্য গ্রামীণ বন নেটওয়ার্কের সভাপতি থোয়া অং মারমা, জ্যোতি বিকাশ চাকমা প্রমুখ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম (সিএইচটি) হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা বলেন, জুম চাষে কোনো বন ধ্বংস হয় না। জুম চাষ পাহাড়িদের প্রথাগত ঐতিহ্য। যুগ যুগ ধরে জুম চাষ চলছে। পার্বত্য চুক্তির পরে সরকারি সংস্থার মাধ্যমে পাহাড়ে বন ধ্বংস করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

বন বিভাগের রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. রফিকুল হাসান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বেশ কিছু এলাকায় বন ধ্বংস হয়ে গেছে। বন বিভাগের মাধ্যমে সেখানে বনায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তা নেওয়া হবে।

Back to top button