জাতীয়

জ্বালানি খাতে সংকট তৈরির দায় জনগণ নেবে না : দেশব্যাপী লোডশেডিংয়ে সিপিবির উদ্বেগ

গ্রাম-উপজেলায় ভয়াবহ লোডশেডিংসহ সারাদেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং-এ তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

এ প্রসঙ্গে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আজ ৬ জুলাই ২০২২ এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের গল্প আজ গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভর্তুকির নামে প্রতিদিন জনগণের করের কোটি কোটি টাকা অপচয় করেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। অথচ জ্বালানি খাতকে আমদানি নির্ভর করাসহ ভুলনীতি ও দুর্নীতি পরিত্যাগ করে দেশের দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞদের, বামপন্থীদের কথা শুনে জ্বালানি খাত অগ্রসর করলে আজ এই পরিস্থিতি হতো না। জ্বালানি খাতকে আমদানি নির্ভর করে সংকট তৈরিসহ সরকারের এই ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় সাধারণ মানুষ নেবে না।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের স্থল ও সমুদ্রের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। গ্যাস চুরি, অপচয় বন্ধ করে, সাশ্রয়ী ব্যবহার করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অন্যদিকে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানিকে গুরুত্ব দিয়ে জ্বালানি খাতকে এলএনজি আমদানি নির্ভরতা অনিবার্য করে তোলা হয়েছে। তেলের ওপর নির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, সংবিধানের মূল দৃষ্টিভঙ্গিকে উপেক্ষা করে বেসরকারি খাতের প্রাধান্যও বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে কমিশনভোগী ও বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে। প্রতিবছর জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে ও হচ্ছে।

আজ তার পরিণতিতে বিদ্যুৎ সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। কৃষি শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশ আরেক সংকটে পড়বে।

বিবৃতিতে বিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতের শ্বেতপত্র প্রকাশ, জ্বালানি অপরাধীদের চিহ্নিত ও বিচারের দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে সারাদেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করারও দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হলে প্রথমে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে সাশ্রয়ী ব্যবহার, এসির ব্যবহার বন্ধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। সর্বত্র এসির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণ মানুষ, কৃষি-শিল্পের অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে রেন্টাল, কুইক রেন্টালসহ অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানান হয়। একইসাথে জ্বালানি খাতে আমদানি নির্ভরতা দূর করে জাতীয় সক্ষমতা বাড়াতে স্থল ও সমুদ্র ভাগে নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধান ও উত্তোলনে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে, সরকারের ভুলনীতি, দুর্নীতি ও জ্বালানি অপরাধীদের শাস্তি এবং নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে ও ভৌতিক বিলের বিরুদ্ধে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানায় সিপিবি।

Back to top button