টাকা পাচারে উৎসাহ সৃষ্টিকারী গণবিরোধী বাজেট – বাম জোট
বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বড় ও ঘাটতি বাজেট পূরণ করতে সাধারণ মানুষের কাঁধে করের বোঝা চাপানো হবে। এমনিতে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে চিড়েচ্যাপটা সাধারণ জনগণ আরও বিপদে পড়বে। বৈষম্য আরও বাড়বে। নেতৃবৃন্দ অর্থপাচারকারীকে শাস্তি না দিয়ে ওই টাকা উদ্ধার না করে, এই বাজেটে পাচার করা অর্থ নামে মাত্র কর দিয়ে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব ‘অনৈতিক ও টাকা পাচারে উৎসাহ সৃষ্টিকারী’, গণবিরোধী বাজেট হিসেবে আখ্যায়িত করে এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করেন।
নেতৃবৃন্দ এই বাজেট বাতিল করে বর্তমান সংকটে নিত্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে রেশন ব্যবস্থা, ন্যায্যমূল্যের দোকান চালুসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও সরাসরি সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ বাড়িয়ে, জনগণের ওপর করের বোঝা কমিয়ে জনবান্ধব বাজেট প্রণয়নের দাবি জানান।
আজ ১০ জুন ২০২২ বিকেল ৪ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে তোপখানা-পল্টন-জিরো পয়েন্ট-জিপিও-বাইতুল মোকাররম হয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমাবেশ করেন। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ্ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, ওয়ার্কাস পার্টি মার্কসবাদী নেতা বিধান দাস। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবি নেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল। এসময় সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, বাসদ নেতা জুলফিকার আলী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের শামীম ইমাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মুক্তবাজারের নামে লুটপাটের অর্থনীতি বজায় রেখে জনবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করা যাবে না। নেতৃবৃন্দ এর বিরুদ্ধে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলে লুটপাটকারীদের হাত থেকে দেশ বাঁচাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি প্রবর্তনসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যর্থ সরকার ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষায় বাজেট ঘোষণার দিনই ভোজ্যতেলের মূল্য বাড়িয়ে দিলো। জনমত উপেক্ষা করে অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। জ্বালানি খাতসহ সর্বত্র অনিয়ম দুর্নীতি-ভুলনীতি দূর করা হয়নি। আর এসবের দায় জনগণের কাঁধে চাপানো হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ গ্যাসের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর যে কোনো অপচেষ্টা জনগণ রুখে দাঁড়াবে।
নেতৃবৃন্দ সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিহত-আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।