চবিতে রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী’র আয়োজনে আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষা বৈচিত্র্য উৎসব অনুষ্ঠিতঃ
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): “নিজের ভাষায় মনের মতো সাজাই কথার ডালা, সংস্কৃতি নয় অবহেলার এবার অহংকারের পালা” স্লোগানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক সংগঠন রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে “আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষা বৈচিত্র্য উৎসব -২০২২” অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে গতকাল বুধবার বিকাল ৪:০০ ঘটিকায় এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি অম্লান চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে এবং উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ( ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রান বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া এবং সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে শুভ উদ্বোধন করেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.কাঞ্চন চাকমা। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক সজীব তালুকদার এবং অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন রবি বিকাশ চাকমা ও পহেলা চাকমা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য খুবই চমৎকার। আমরা বিশ্বায়নের যুগে বসবাস করি তাই আমাদের শ্রেণী বিভাজন করা উচিত না। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য থাকলেও বহুমুখী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে বসবাস করতে চায়।
উদ্বোধক অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা বলেন, দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক আদিবাসী শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে। তাই, চবিতে একটি আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতি গবেষণা ইনস্টিটিউট তৈরি করা যায় কিনা এবেপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক এস এম মনিরুল ইসলাম বলেন, আদিবাসীরা নিজস্ব জীবন প্রণালীতে অভ্যস্ত। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীদের মেলবন্ধন তৈরি হবে।
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন বলেন, একটি আধুনিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য হলো সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ। আদিবাসী এবং আদি বাসিন্দা দুটি’ আলাদা জিনিস। আদিবাসী হলো কালচারাল ক্যাটাগরি আর আদি বাসিন্দা ডেমোক্রেটিক। কে, কোথায়, কখন আসছে সেটির উপর ভিত্তি করে পৃথিবীর কোথাও আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক পরিচয় নির্ধারিত হয় না বলেও মনে করেন এই আদিবাসী গবেষক।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য প্রদান করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া, সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চবি শাখার প্রতিনিধি অন্বেষ চাকমা প্রমুখ। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সজীব তালুকদার, পহেলা চাকমা, রবি বিকাশ চাকমা এবং ডচেংনু চৌধুরীর সঞ্চালনায় রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা আদিবাসী গান, নাচ, কবিতাসহ বিভিন্ন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা করেন।
