পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে তরুণদের সংগঠিত হওয়ার বিকল্প নেইঃ তারুণ্যের সংলাপে বক্তারা
বিশেষ প্রতিবেদন: পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে তরুণদের সংগঠিত হওয়ার বিকল্প নেই । এই চুক্তি বাস্তবায়নে পাহাড়-সমতলের আদিবাসী তরুণদেরকে যেমন সংগঠিত হতে হবে তেমনি প্রগতি বাঙালি-আদিবাসী তরুণদের’কেও সংগঠিত হতে হবে। পার্বত্য চুক্তির দুইযুগ উপলক্ষ্যে আইপিনিউজ এর ফেইসবুক পেইজে অনলাইন সংলাপে বক্তারা এই কথাগুলো বলেন বক্তারা।
গত ২২শে ডিসেম্বর চট্টগ্রাম চুক্তির দুই যুগ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তারুণ্যের সংলাপ শীর্ষক আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন পরিবেশ বার্তার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল। উক্ত যুব সংলাপে অংশ নেন জাতীয় আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি হরেন্দ্র নাথ সিং, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য সোহেল চন্দ্র হাজং, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সহ-সভাপতি চন্দ্রা ত্রিপুরা, বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সভাপতি সাব্বাহ আলি খান কলিন্স ও গণমাধ্যমকর্মী শামীমা সুলতানা প্রমুখ।
অনলাইন সংলাপে জাতীয় আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি হরেন্দ্র নাথ সিং বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করুণা নয়, ছলনা নয়। রাষ্ট্র যেহেতু চুক্তি করেছে রাষ্ট্রকে চুক্তির বাস্তবায়ন করতে হবে যারা ৯৭ সালে ক্ষমতায় ছিল, তারা এখনো ক্ষমতায় আছে তাহলে চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা কোথায়? আমরা এই দ্বিচারিতা ভাঙতে চাই।
এদিকে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য সোহেল চন্দ্র হাজং বলেন, পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় চুক্তির আসল স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে না। পার্বত্য চুক্তির প্রত্যেকটি ধারা একটি অপরটির সাথে জড়িত। যে ধারাগুলোতে হাত দেয়া হয়নি সে ধারাগুলোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আদিবাসীরা সংবিধানে যুক্ত হতে চেয়েছে, তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী নয় বলেও উল্লেখ করেন এই যুব নেতা।
বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সহ-সভাপতি চন্দ্রা ত্রিপুরা বলেন, জুম্ম তরুণ সমাজের একটি বড় অংশের মধ্যে চুক্তি নিয়ে যে সম্যক ধারণা থাকার কথা তা নেই। আত্মসমালোচনা করেই বলতে চাই চুক্তির বিষয়ে জানানো কিংবা সচেতনতা গড়ে তোলার মতো প্রক্রিয়াগুলো করতে পারছিনা। আমাদের সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হলে আগে ভূমিকে রক্ষা করতে হবে। উন্নয়নকে প্রলেপ হিসেবে লাগানো হচ্ছে কিন্তু জীবনমান নিয়ে কথা বলা হচ্ছে না। আমাদের আরো বেশি করে জানতে হবে, পড়ালেখা করতে হবে এবং সচেতন হতে হবেম্যাপের যুবসমাজ এগিয়ে আসলে পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের সকল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব বলেও মনে করেন এই নারী নেত্রী।
এছাড়াও গণমাধ্যমকর্মী শামীমা সুলতানা বলেন, পাহাড়ের জনমিতিতে বাঙালির পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলছে এবং যে হারে বাড়ছে তাতে আদিবাসীদের হার শূন্যের কোঠায় নেমে আসলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। যারা আইন পরিবর্তন, আইন প্রণয়নের জায়গায় আছেন তাদেরকে সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও মনে করেন তরুণ এই সাংবাদিক।
বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সভাপতি সাব্বাহ আলি খান কলিন্স বলেন, ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর যে চুক্তি হয়েছিল সেটি ছিল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আদিবাসীদের পিছিয়ে রাখার অন্যতম কারণ আমলা নির্ভরতা। নাগরিকের অধিকার বাস্তবায়নের যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামকে আরো বেশি সুসংহত আরো বেগবান করতে হবে বলেও মনে করেন এই যুব নেতা।