গাইবান্ধায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ঘটনায় জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি গোবিন্দগঞ্জ গাইবান্ধার আয়োজনে সোমবার ৪ জানুয়ারি সকাল ১১ টার সময় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ৬ নভেম্বর ২০১৬ হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে বিচার করার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি রফিক আহম্মেদ সিরাজী, সিপিবি গাইবান্ধা জেলা কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুরাদ জামান, সিপিবি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাফরুল ইসলাম প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সুফল হেমব্রম, কোষাধ্যক্ষ গণেশ মুরমু, প্রচার সম্পাদক রাফায়েল হাজদা ও প্রিসিলা মুরমু সহ আরও অনেকে। বক্তারা বলেন, সাঁওতালদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সেইসাথে সাঁওতাল হত্যা, বসতবাড়ী ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং জড়িত আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার সহ ৭দফা দাবী জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর পুলিশ সঙ্গে নিয়ে রংপুর চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জমিতে আখ কাটতে যান চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীরা। এসময় নিজেদের বাপ-দাদার জমি দাবী করে বাধা দেন সাঁওতালরা। এতে পুলিশ, চিনিকল শ্রমিক ও সাঁওতালদের ত্রিমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে রমেশ টুডু, শ্যামল হেমব্রম ও মঙ্গল মার্ডি নামের তিন সাঁওতাল নিহত হন। আহত হন উভয়পক্ষের ৩০জন। উক্ত ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষ থেকে থোমাস হেমরম বাদী হয়ে তৎকালীন এমপি আবুল কালাম আজাদ, চিনিকলের এমডি আব্দুল আউয়াল, সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল, কাটাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রফিকসহ ৩৩জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০০-৬০০জনকে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় এজাহার দাখিল করা হয়। পুলিশ সেটি জিডি হিসেবে ইন্ট্রি করেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ১৪৪০২/১৬ নং রীট পিটিশন দাখিল করলে থোমাস হেমরমের জিডি ৫৬০/১৬ নং মামলা ইন্ট্রি করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। পিবিআই ২০১৯ সালে ২৩ জুলাই মুল আসামীদের বাদ দিয়ে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে ২৬৩ নং অভিযোপত্র (চার্জশীট) দাখিল করে। এরপর ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চার্জশীট প্রত্যাখান করে নারাজি দাখিল করা হয়। নারাজি আমলে নিয়ে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।